ইতেকাফ এর অর্থ কি | ইতেকাফের ফজিলত ও গুরুত্ব
আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা, কেমন আছেন? আশা করছি আল্লাহর রহমতে ভালই আছেন। আজকে নতুন আর্টিকেল নিয়ে হাজির হলাম আপনাদের সামনে। আজকের টপিক্সটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকের ট্রফিকটা সবাই মনোযোগ সহকারে পড়বেন। আজকে আমি আপনাদেরকে জানিয়ে দেবো "ইতেকাফ এর অর্থ কি? ইতেকাফ কখন হয়? ইতেকাফের ফজিলত গুরুত্ব।" তো চলুন আমাদের মূল আলোচনায় চলে যাইbc। আমাদের আজকের আলোচনা শুরু করা যাক।
ইতেকাফ এর অর্থ কি
ইতেকাফ শব্দের অর্থ হচ্ছে বিচ্ছিন্ন থাকা, নিঃসঙ্গ থাকা, অবস্থান করা। এই শব্দটি "عكف" মূল ধাতু থেকে নির্গত হয়েছে। শরীয়াতের পরিভাষায়, যে সকল মসজিদে জামাআতের উদ্দেশ্যে একসাথে সমবেত হওয়া যায়, সে সকল মসজিদে আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি কামনায় ইবাদত করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অবস্থান করাকে ইতেকাফ বলে।
মহান আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভের আশায় সকল চিন্তা মাথা থেকে সরিয়ে একমাত্র আল্লাহর ধ্যান মাথায় এনে মসজিদে রমজান মাসের শেষের দশদিনের একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ইবাদতের মশগুল থাকাকে ইতেকাফ বলে। ইতেকাফ যিনি করেন তাকে মুতাকিফ বলা হয়। রোজার মাসে রমজানের আরেক নেয়ামত হল ইতেকাফ।রমজান মাসে আমাদের নবী (সাঃ) ও ইতেকাফ করতেন।হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত আছে:
মহানবী সাঃ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রমজান মাসের শেষ দশ দিন ইত্তেকাফ করতেন। এরপর তার দেখাদেখি তার স্ত্রীগণও এতেকাফ করতেন।
পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে:
"তোমরা মসজিদে ইতেকাফকালে স্ত্রীদের সঙ্গে মেলামেশা করো না’ (সুরা বাকারা: আয়াত ১৮৭)।"
"কোন শরিয়াতী কারণ ছাড়া ইতেকাফের সময় গৃহ বা মসজিদ থেকে বের হলে এতে ইতেকাফ ভেঙে যাবে।"
আমাদের মহানবী (স) আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য দুনিয়াবি সমস্ত চিন্তা বাতিল করে একমাত্র আল্লাহর চিন্তায় এবাদতে মশগুল থাকতেন।
আপনাকে সেই ১০ দিন সমস্ত চিন্তা ভাবনা মাথা থেকে দূর করে দিয়ে একমাত্র আল্লাহ ধ্যান মাথায় নিয়ে ইবাদত করতে হবে মসজিদে। আপনি কখনো কারো সাথে কথা বলতে পারবেন না কোন কিছু নিয়ে। মসজিদ ছেড়ে কখনো কোথাও যাইতে পারবেন না।
আরো জানুন:
টেলিটক নাম্বার দেখার উপায় ২০২৩
পুরুষরা অবশ্যই মসজিদে ইতেকাফ করবে। মহিলারা গৃহে যেখানে নামাজ পড়ে সেখানে পর্দা টেনে ইতেকাফ করবে। তবে যেসব মহিলার ছোট বাচ্চা আছে, হাজবেন্ড অসুস্থ আছে তাদের ক্ষেত্রে ইতেকাফের চাইতে পরিবারের দায়িত্ব পালন করা এতেকাফের চেয়ে বেশি পরিমাণে গুরুত্বপূর্ণ।
ইতেকাফের গুরুত্ব ও ফজিলত
ইত্তেফাকের অসংখ্য গুরুত্ব এবং অধিক পরিমাণ ফজিলত রয়েছে যা কোরআনুল কারীম ও হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে।
এতেকাফের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে শবে কদরের রাত্রির সৌভাগ্য অর্জন করা। অর্থাৎ শবে কদর তো কোন নির্দিষ্ট রাত হিসেবে বলা হয়নি। রমজানের শেষের ১০ দিনের যে কোন বিজোড় রাতে শবে কদর হতে পারে। তাই রমজানের শেষের দশ দিন যদি ইতেকাফে বসা হয়, তাহলে বিজোড় রাতের যে কোন রাতেই শবে কদর হলে সেই রাতের ভাগ্য লাভ করা হবে।
যেকোনো গ্রামে বা মহল্লায় অথবা বস্তি থেকে অন্তত একজন মানুষ হলেও ইতেকাফে বসতে হয়। কোন গ্রাম অথবা মহল্লা থেকে সে গ্রাম বা মহল্লার মসজিদে যদি কমপক্ষে একজন ইতেকাফে বসে তাহলে সকল গ্রামবাসীর ভাগ্যে ইতেকাফ লেখা হয়ে যায়।
আর যদি গ্রাম বা পারা বা মহল্লার মধ্যে যদি কোন মানুষ ইততেকাফে না বসে তাহলে সেই গ্রামবাসী অত্যন্ত গুনাহগার হবে।
তো কোন লোকজন যদি ইতেকাফে না বসে তাহলে অবশ্যই গ্রামের গণমান্য লোকজনের মধ্যে আলাপ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে অন্তত একজন মানুষ হলেও ইতেকাফে বসাতে হবে। আর কখনো টাকা পয়সা বা কোন কিছুর বিনিময়ে কাউকে ইতেকাফে বসানো যাবে না। কারণ ইতেকাফ করা হয় শুধুমাত্র আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জন করার জন্য। অর্থের বিনিময়ে যদি কেউ ইতেকাফে বসে তাহলে বিনিময়টা তো আল্লাহর সন্তুষ্টি জন্য হলো না, সেটা অর্থের বিনিময়ে হয়ে গেল।
আর ইতেকাফে অবস্থান করা ব্যক্তির খাবার তার পরিবারের পক্ষ থেকে অথবা গ্রামের লোকজন দিয়ে যাবে। তিনি যদি বাসায় যান তার খাবার আনার জন্য তাহলে কিন্তু তার ইতেকাফ ভঙ্গ হবে। এ সময় তাকে আর অন্য কোন চিন্তা করা যাবে না। সব সময় আল্লাহপাকের ধ্যানে মগ্ন থাকতে হবে।
ইতেকাফ করা ব্যক্তি যদি রাতের বেলায় ঘুমিয়ে থাকেন, তাহলে সেই রাতেও তার ইবাদত করা হয়েছে বলে ধরা হয় এবং তার আমলনামায় সওয়াব লেখা হয়।
ইতেকাফ সম্পর্কে মহান মহানবী সঃ এর পক্ষ থেকে হাদিস:-
শেষ কথা:
প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা, আমাদের আজকের আলোচনা থেকে আপনারা ইতেকাফের এর অর্থ কি ইতেকাফ কখন হয় এবং ইতেকাফের গুরুত্ব ও ফজিলত সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি দ্বারা আপনার কিছুটা হলেও উপকার হয়েছে। আর্টিকেলটি অবশ্যই আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দেবেন যাতে সেও ইতেকাফ সম্পর্কে জানতে পারে। আর কমেন্ট বক্সে ছোট্ট করে কমেন্ট করে আপনার মন্তব্য জানাতে কিন্তু ভুলবেন না। আমরা খুব শীঘ্রই আপনার কমেন্টের রিপ্লাই দেওয়ার চেষ্টা করুন। এই দাদার ইসলামিক নিত্য নতুন আরো খবরা-খবর জানতে হলে প্রতিনিয়ত আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করবেন। এতক্ষণে আমাদের ওয়েবসাইটে সময় দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আজকে এই পর্যন্তই। ফিরে আসবো নতুন কোন আর্টিকেল নিয়ে। সেই পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।
আরো পড়ুন:
মাশাআল্লাহ! আপনি অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন।অনেক কিছু শিখলাম আপনার এই আর্টিকেল থেকে। অসংখ্য ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুন