কপি পেস্ট করে ইনকাম | Copy Paste Income
আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আশা করছি ভালই আছেন। তো আবারো হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের সামনে নতুন একটি আর্টিকেল নিয়ে। অনেকেই হয়তো শুনেছেন, কপি পেস্ট করে অনলাইনে টাকা ইনকাম করা যায়। কিন্তু এই বিষয়টা কিভাবে করতে হয় অথবা এই বিষয়টা কি এই সম্পর্কে সবাই অবহিত নন। কিন্তু আপনাদের সবার মাথায় আছে কম বেশি করে, কপি পেস্ট করে টাকা ইনকাম করা যায়। আজকে আপনারা জেনে খুশি হবেন, আজকে আমি আপনাদের সাথে সেই কপি পেস্টের বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করব। আপনাদেরকে দেখিয়ে দেবো আপনারা কিভাবে কপি পেস্ট করে টাকা ইনকাম করবেন। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে মূল আলোচনায় চলে যাই। আমাদের আজকের আলোচনা শুরু করা যাক।
কপি পেস্ট
কপি পেস্ট বলতে বোঝায় আপনি অন্য কারো ভিডিও বা অন্য কারো কোন কন্টেন্ট কপি করে নিজের youtube এ আপলোড করবেন। কিন্তু আপনাকে সেটা হুবহু কপি করলে হবে না। যেরকম কপি করেছেন সেরকম আপনার youtube চ্যানেলে আপলোড করে দিলেন। এটা কিন্তু হবে না। এতে করে আপনি ইউটিউব এর কাছে কপিরাইট ক্লাইম খাবেন। যার ফলে আপনার চ্যানেল সেই ভাবে রেংক বা গ্রো করবে না। অন্যদিকে আপনি যেই ভিডিওটা কপি করে আপলোড করেছেন সেই ভিডিও দিয়ে যদি আপনার টাকা ইনকাম হয় তাহলে সেই ইনকামটা আপনার অ্যাকাউন্টে আসবে না। যার ভিডিও কপি করেছেন তার একাউন্টে ইনকামটা চলে যাবে। যার ফলে আপনি সেই ভিডিও থেকে ইনকাম করতে পারছেন না।তো কপি পেস্ট করার সময় অবশ্যই আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে, ভিডিওটা আপনি কপি করে হুবহু একইভাবে আপলোড করে যেন না দেন। সেটা অবশ্যই আপনাকে কিছুটা এডিট করে নিতে হবে।
কপি পেস্ট কত প্রকার
আপনি চাইলে দুই ভাবে কপি পেস্টের কাজটি করতে পারেন:
১/ইউটিউব থেকে অন্যদের ডাউনলোড করা ভিডিও এডিটিং করে
২/অন্যান্য মিডিয়ার ভিডিও কপি করে: যেমন Tiktok
ইউটিউব থেকে কপি পেস্ট করে ইনকাম
ইউটিউব থেকে আপনি অন্য কারোএকটি ভিডিও ডাউনলোড করলেন। এখন আপনাকে সেই ভিডিওটি অবশ্যই এডিট করে নিতে হবে। এর জন্য অবশ্যই আপনার ভিডিও এডিটিং এর কাজটি জানা থাকতে হবে। আপনি বিভিন্নভাবে ভিডিও এডিট করতে পারেন। আপনি চাইলে মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও এডিট করতে পারেন। আবার কম্পিউটারের মাধ্যমে ভিডিও এডিট করতে পারেন। মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে ভিডিও এডিট করার মত। যেমন কাইনমাস্টার(KineMaster), ইনশট(InShot) ইত্যাদি।
কম্পিউটারে ভিডিও এডিটিং করার সফটওয়্যার
আবার কম্পিউটারের ভিডিও এডিট করার মত বিভিন্ন সফটওয়্যার রয়েছে। যেমন:-
১কামতাসিয়া(Camtasia)
২/ইনশট(InShot)
৩/ফিল্ম মেকার(Film Maker)
৪/পাওয়ার ডিরেক্টর(Power Director)
৫/অ্যাকশন ডিরেক্টর( Action Director)
৬/এডোপ প্রিমিয়ার রাশ (Adobe Premiere Rush)
৭/ফ্লিমোরাগো(Flimora Go)
৮/ফানি মেট(FuniMate)
৯/কুইক (Quik)
১০/ভিভা ভিডিও(Viva video)
উপরে মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিট করার গুরুত্বপূর্ণ দশটি সফটওয়্যারের নাম দেওয়া হল। আপনার কাছে যেই সফটওয়্যারটি ভালো লাগে আপনি সেই সফটওয়্যার দিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে ভিডিও এডিট করতে পারবেন। আমার কাছে কাইনমাস্টার এবং ইনসট অ্যাপ্লিকেশনটি ভালো লাগে। তাই আমি ভিডিও এডিট করার কাজে কাইনমাস্টার এবং স্ক্রিনশট অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করে থাকি। ভিডিও এডিটিং এর ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তার শীর্ষে আছে কাইনমাস্টার অ্যাপ্লিকেশনটি। আপনি চাইলে কাইনমাস্টার অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করতে পারেন। আবার আপনি চাইলে কম্পিউটার দিয়ে ভিডিও এডিট করতে পারেন। যাদের কম্পিউটার নেই তারা মোবাইল দিয়ে এডিট করবেন। আর যাদের কম্পিউটার রয়েছে তারা কম্পিউটার দিয়ে আরো জটিলভাবে ভিডিও এডিট করতে পারবেন। কম্পিউটারে ভিডিও এডিট করার নানান ধরনের সফটওয়্যার রয়েছে। আপনি চাইলে যেই কোন সফটওয়্যার দিয়ে ভিডিও এডিট করতে পারবেন। আপনার পছন্দমত একটি সফটওয়্যার বেছে নিয়ে সেই সফটওয়্যার এর এডিটিং কাজ শিখে তখন আপনি ভিডিও এডিট করবেন। নিচে ভিডিও এডিট করার জনপ্রিয় কয়েকটি কম্পিউটারের সফটওয়্যারের নাম দেওয়া হলো:
১/কামতাশিয়া (Camtasia)
২/লাইট ওয়ার্কস ভিডিও এডিটর (Light Works Video Editor)
৩/ওপেন শর্ট(Award Winning Software)(Open Shot)
৪/হিট ফিল্ম এক্সপ্রেস (Hit Film Express)
৫/শর্টকাট (Open Source)( Short Cut)
যেই পাঁচটি সফটওয়্যার এর নাম উল্লেখ করলাম এগুলা জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে ভিডিও এডিটিং এর ক্ষেত্রে। আপনি চাইলে যেকোনো একটি সফটওয়্যার দিয়ে ভিডিও এডিটিং এর কাজ সম্পন্ন করতে পারেন। আমি প্রথম সফটওয়্যার টি ব্যবহার করে থাকি। সেটি হলো কামতাশিয়া সফটওয়্যার। এ সফটওয়্যারটি সচরাচর সবাই ব্যবহার করে থাকে। এই সফটওয়্যারটি দিয়ে ভিডিও এডিট করা অনেকটাই সহজ হয়। তো আপনি চাইলে এই সফটওয়্যার টি ব্যবহার করতে পারেন অথবা অন্য যেকোন একটি সফটওয়্যার দিয়ে ভিডিও এডিটিং এর কাজ শিখে আপনি ভিডিও এডিট করতে পারবেন।
ভিডিও এডিটিং এর কি কি বিষয় জানা প্রয়োজন
এডিটিং এর কি কি বিষয় জানা থাকলে আপনি কপি পেস্ট করতে পারবেন।
১/লোগো রিমুভ,
২/সাউন্ড এডজাস্ট,
৩/ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ ও
৪/সাউন্ড এফেক্ট।
অন্তত এই চারটি কাজেরও যদি আপনি সফটওয়্যার দিয়ে সেই কপি করা ভিডিওটিতে এডিট করতে পারেন তাহলে আপনার এডিট করা সুসম্পন্ন হয়ে যাবে এবং আপনি সেই ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করতে পারবেন। তখন আর আপনি এতে করে কপিরাইট ক্লাইম খাবেন না। আবার টিকটক থেকে যদি ভিডিও কপি করে পোস্ট করেন তাহলে কিন্তু আপনার কপিরাইট ক্লাইম হবে না। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে সেই টিকটকের ভিডিওটি আগে কেউ ইউটিউবে পোস্ট করেছে কিনা। যদি না করে থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই টিকটকের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করে ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়া আরো কিছু কপিরাইট ফ্রি সাইট পাওয়া যায় যেসব সাইট থেকে ভিডিও ডাউনলোড করে ইউটিউবে আপলোড করতে পারবেন। এতে করে আপনি ক্লাইম খাবেন না। ইনকামের সাথে youtube এর কিছু শর্ত রয়েছে। সেই ইউটিউবের নির্দিষ্ট কিছু শর্ত ফিলাপ করতে পারলে আপনার ইনকাম হওয়া শুরু হবে।
যেমন:
১/আপনার চ্যানেলে অবশ্যই এক হাজার সাবস্ক্রাইবার হতে হবে।
২/আপনি যদি আপনার চ্যানেলের শুধুমাত্র লং ভিডিও আপলোড করে থাকেন তাহলে অবশ্যই বর্তমান সময় থেকে শুরু করে গত এক বছরের মধ্যে যদি ২ লক্ষ ৪০হাজার মিনিট ওয়াচ টাইম হয় তাহলে ইউটিউবের শর্তগুলো আপনার ফিলাপ করা সম্পূর্ণ হবে। যার ফলে আপনি এডসেন্স যোগ করতে পারবেন এবং এডসেন্সের মাধ্যমে আপনার ভিডিওতে অ্যাড শো হবে এবং সেই অ্যাপ শো করার বিনিময়ে আপনার ইনকাম হবে।
৩/যারা শর্ট এবং লং ভিডিও সহ দুই ধরনের ভিডিও আপলোড করেন তাদের ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে হয়তো আপনার শর্ট ভিডিওতে ২০ মিলিয়ন ভিউজ হতে হবে অথবা আপনার লং ভিডিওতে ২ লক্ষ ৪০ হাজার মিনিট ওয়াচ টাইম হতে হবে। আর সাথে তো 1000 সাবস্ক্রাইবার ফিলাপ হতেই হবে। তো আপনার যদি শর্ট ভিডিও কন্ডিশনটি আগে ফিলাপ হয়ে যায় তাহলে ইনকাম হওয়া শুরু হবে অথবা লং ভিডিওর কন্ডিশনটিও যদি আগে ফিলাপ হয়ে যায় তাহলে আপনার ইনকাম হওয়া শুরু হবে। অর্থাৎ শর্ট ভিডিও অথবা লং ভিডিওর যে কোন একটি শর্ত ফিলাপ হতে হবে এবং সাথে ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার হতে হবে। তাহলে আপনি চ্যানেল মনেটাইজ এর মাধ্যমে এডসেন্স এড করতে পারবেন। যার ফলে আপনার ভিডিওতে এড শো এর মাধ্যমে আপনার ইনকাম হবে।
শেষ কথা:
তো পাঠকগণ এই হল আমাদের আজকের আলোচনা। আজকের আলোচনা থেকে আপনারা খুব সহজে জানতে পেরেছেন কপি পোস্ট করে আপনারা কিভাবে ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করবেন। আজকের আলোচনা থেকে আপনার কিছুটা হলেও উপকার হয়েছে। আপনি খুব সহজে উপরোক্ত কাজগুলো সুসম্পন্ন করার বিনিময় ইউটিউব থেকে টাকা আয় করতে পারবেন। আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন। আর টাকা ইনকাম রিলেটেড আরো কোন সোর্স জানতে হলে অবশ্যই আমাদের সাথেই থাকুন। এতক্ষণে সময় দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আজকে এই পর্যন্তই। দেখা হবে পরবর্তী নতুন কোন ব্লগে। সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।
আসসালামু আলাইকুম।
আরো পড়ুন:
এয়ারটেল বন্ধ সিমের অফার জানতে হলে এখানে ক্লিক করুন: ক্লিক