ঈদ মোবারক | ঈদুল ফিতর

 ঈদ মোবারক | ঈদুল ফিতর

আসসালামু আলাইকুম। ঈদ মোবারক।আজকে আমরা জানবো ঈদ মোবারক ও ঈদুল ফিতর সম্পর্কে। তো চলন শুরু করি। প্রথমেই আমাদেরকে জানতে হবে ঈদ মোবারক কি।

ঈদ মোবারক কি

ঈদ মোবারক শব্দটা ঈদ উপলক্ষে ব্যবহার করা হয়। সাধারণত ঈদ আসার আগে যখন ঈদের আমেজ শুরু হয়ে যায়, ঈদের কিছুদিন আগেই সমস্ত মুসলিম ভাইয়েরা ও বোনেরা একে অপরের কে ঈদ মোবারক জানাতে শুরু করে। 

ঈদ মোবারক হল মুসলিমদের একটি ঐতিহ্যবাহী শুভেচ্ছা বিনিময় করার বাক্য। এই বাক্যটির অর্থ হচ্ছে আনন্দ উদযাপন কল্যাণময় হোক। এই বাক্যটি বলে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এই বাক্যটি এসেছে আরবি  عيد مبارك‎‎ শব্দ থেকে। কিছু কিছু রাষ্ট্রে এই বাক্যটি বিভিন্ন অনুষ্ঠান ধর্মীয় অনুষ্ঠানের রূপ নেয়। 

সাধারণত ঈদ চাঁদ দেখাকে কেন্দ্র করে উদযাপিত হয়। চাঁদ দেখার পরে প্রিয়জনদের মধ্যে শুরু হয় ঈদের আনন্দ শুভেচ্ছা বিনিময়। রমজানের শেষে ঈদ একটি আনন্দ বার্তা নিয়ে আসে। রমজানের সারা একমাস রোজা রাখার পরে মানুষ এই ঈদের সময় ঈদের আনন্দ উপভোগ করে।  প্রতি বছরে ঈদ উপলক্ষে মানুষের জোরপূর্বক ভাবে পূর্ব প্রস্তুতি চলে। প্রতিবছরের মানুষ এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। বাচ্চাদের মধ্যে ঈদের আনন্দ উপভোগ করাটা একটু বেশি পরিমাণে দেখা যায়। কারণ ঈদের সময় বাচ্চারা বেশি আনন্দিত। বাচ্চারা নতুন নতুন পোশাক পরে বাহিরে নামে, একজন আরেকজনকে এসে নতুন পোশাক দেখান। এতে বাচ্চাদের মধ্যে ঈদের আনন্দ বেড়ে যায়।


ঈদুল ফিতর ২০২৩

রমজান মাসের পরে যেই ঈদ আসে সেই ঈদকে বলা হয় ঈদুল ফিতর। আর কোরবানির ঈদকে বলা হয় ঈদুল আযহা। আজকে আপনাদের সাথে আমি ঈদুল ফিতর নিয়ে আলোচনা করব। ঈদুল ফিতরে মানুষ অধিক পরিমাণে আনন্দ ফুর্তি করতে পারে এবং প্রচুর পরিমাণে সময় পায় সারা দিনব্যাপী। কিন্তু ঈদুল আযহাতে মানুষ সেভাবে সময় পায় না। কারণ মানুষজন কোরবানির পশু নিয়ে ব্যস্ত থাকে। পশু কাটাকাটি করতে করতে মানুষের বিকাল হয়ে যায়। সারাদিনের অধিকাংশ সময় মানুষের সময় কেটে যায় কোরবানির পশুতে। যার ফলে মানুষ ঘোরাফেরা বা আনন্দ করতে করার সময় পায় না।

যখন রমজান মাস শেষের দিকে চলে যায়, তখন থেকেই সারা বিশ্বের মুসলিমদের মনে ঈদুল ফিতরের আমেজ জেগে উঠে। 

যেহেতু রমজান মাস শেষ হওয়ার পরপরই চাঁদ দেখার মাধ্যমে ঈদুল ফিতরের দিন ঘোষণা করা হয়। তো সেই ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে নানান ব্যস্ততা দেখা দেয়। মানুষজন অনেক প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে ঈদুল ফিতরকে উদ্দেশ্য করে। বাচ্চারা ঈদের জন্য নতুন জামা কাপড় কেনাকাটা করে। মেয়েরা ঈদ করার জন্য নতুন নতুন কাপড়-চোপড় কিনে, বিভিন্ন অলংকার কিনে থাকেন। সকল মুসলিম ভাই কমবেশি করে ঈদে পরিধান করার জন্য জামা-কাপড় কিনে থাকেন।

আরো জানতে ক্লিক করুন:

থাইরয়েড সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন


ঈদে মুসলিমদের করণীয়

ঈদুল ফিতরের সময় আমাদের অনেক কিছু করণীয় আছে। আমরা ঈদে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহপাকের নিকটবর্তী হতে পারি। 

নবীজি বলেছেন, 

"যদি তারা এশা ও ফজর নামাজের মধ্যে কী আছে তা জানতে পারতো তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এ দুই নামাজের জামাতে শামিল হত।"------

........(সহিহ বোখারি : ৬১৫)

ঈদের জন্য আমাদের সবচাইতে বড় কাজ হচ্ছে ফজরের সালাত আদায় করা। কিন্তু আমরা অনেকেই আছি ফজরের সালাত আদায় করি না। কিন্তু ফজরের সালাত আদায় করার অত্যন্ত প্রয়োজন। 

আমাদের নবীজি বলেছেন,"মুসলমানরা যদি জানতেন, "এশার নামাজ এবং ফজরের নামাজ কতটা গুরুত্বপূর্ণ তাহলে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও নামাজ আদায় করতেন"

কাজেই অবশ্যই আমাদেরকে কষ্ট করে হলেও ফজরের সালাত আদায় করতে হবে।

এরপর ফজরের সালাত আদায় করার পর মানুষজন গোসল করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হবে। এরপর যার যার বাসায় ঈদ উপলক্ষে নিত্যনতুন খাবার রান্না করা হবে। বিশেষ করে সেমাই সব বাসাতে রান্না করা হয়। ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে সেমাই খেয়ে নামাজ পড়া সুন্নত। 

এরপর পরিষ্কার পোশাক পরে অথবা নতুন জামা কাপড় পড়ে পায়ে হেঁটে হেঁটে ঈদের নামাজের ময়দানে যাওয়া উত্তম। তারপরয়ন সেখানে জামাতের সাথে হাজারো/লক্ষ মুসল্লিদের সাথে ঈদের সালাত আদায় করতে হয়। 

আদায় শেষে মুসলিম একে অপরের সাথে কোলাকুলি দিবে, শুভেচ্ছা বিনিময় করবে।


এরপর বাড়িতে এসে অবশ্যই এক মুসল্লি আরেক মুসলমানের খোঁজখবর নিবে, প্রতিবেশীদের খোঁজখবর নিবে। এক প্রতিবেশী বিপদে পড়লে আরেক প্রতিবেশী সহযোগিতা করবে। মুসলিম গরিব দুঃখীদের মাঝে ঈদুল ফিতরের টাকা বিতরণ করবে। মানুষ জন্য সময় আত্মীয়-স্বজন খোঁজখবর নিবে।  

ঈদে মুসলিম একে অপরের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেবে।  

ঈদ হচ্ছে মুসলিমদের একটি সৌভাগ্য। এই ঈদে আমাদের সবাইকে ভালো কাজ করতে হবে। আমাদের সবার নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। অনেকে আমরা ইসলামিক নিয়ম কানুন না মেনে গান-বাজনা করে থাকি। অনেকে আমরা মদ্যপানে লিপ্ত থাকি, জুয়া খেলা খেলে থাকি। আমাদেরকে অবশ্যই এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। খারাপ ছবি দেখা, অশ্লীল ছবি দেখা, নারী-পুরুষদের অবাধ্য চলাফেরা করা-- এগুলা কিছুই করা যাবে না। ঈদের দিনে রোজা রাখা যাবে না। কারণ এই দিনটি আল্লাহপাক মুসলিমদের আনন্দের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছেন। তাই রোজা রাখা নিষেধ। ঈদের দিনে কবর জিয়ারত করা যাবে না, আজেবাজে কাজে লিপ্ত হওয়া যাবে না। নামাজ কালাম বাতিল করে কোন আনন্দ উল্লাসের কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা যাবে না।

ঈদ হচ্ছে একটি ইবাদাত। মহান আল্লাহর তরফ থেকে পাওয়া সৌভাগ্যময় একটি দিন। 

পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করা আছে,

"বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত, সুতরাং এ নিয়েই যেন তারা খুশি হয়। এটি যা তারা জমা করে তা থেকে উত্তম।’ 

......সুরা ইউনুস : ৫৮)


শেষ কথা

কাজেই আমরা সকল মুসলিম জাতিরা ঈদে কোন অশালীন কাজ না করে ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহকে রাজি খুশি করার চেষ্টা করব। আল্লাহ পাক যেভাবে খুশি হয় সেভাবেই আমরা আনন্দ উদযাপন করার মাধ্যমে ঈদ পালন করব। তো আজকে এই পর্যন্তই। পরবর্তীতে ফিরে আসবো নতুন কোন আর্টিকেল নিয়ে। সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।



1 মন্তব্যসমূহ

নবীনতর পূর্বতন