ফিতরা | ফিতরা কত টাকা ২০২৩ | ফিতরা দেওয়ার নিয়ম

ফিতরা | ফিতরা কত টাকা ২০২৩ | ফিতরা দেওয়ার নিয়ম


আসসালামু আলাইকুম। আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো, ফিতরা, ফিতরা অর্থ কি, ফিতরা কত টাকা ২০২৩, ফিতরা দেওয়ার নিয়ম কি? চলুন আমাদের আজকের আলোচনা শুরু করা যাক।

ফিতরা | ফিতরা কত টাকা ২০২৩ | ফিতরা দেওয়ার নিয়ম

ফিতরা 

ফিতরা একটি আরবি শব্দ। আরবি শব্দটি হল। ইসলামে যাহা যাকাতুল ফিতর অথবা ফিতরের যাকাত বা সাদাকাতুল ফিতর নামে পরিচিত। 

ফিতরা অর্থ কি

ফিতর বা ফাতুর বলতে সকাল বেলার খাদ্যদ্রব্য কে বোঝানো হয়। যা দ্বারা রোযাদ্বার গণ রোজা ভঙ্গ করে থাকেন। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রোজাদারদেরকে অথবা গরিব দুস্থদের মাঝে কোন কিছু বিতরণ করাকে যাকাতুল ফিতর বলে। এক কথায় বলতে গেলে, সাদাকাতুল ফিতর বা ফিতরা হল রমজান মাসেই ঈদের নামাজের আগে অসহায়, গরিব, দুঃখী, এতিম ও অনাথদের মাঝে  কিছু বিতরণ করে দেওয়া, যাতে করে তারাও সুন্দরভাবে ঈদ উদযাপন করতে পারে। ফিতরা হল ইসলামী অনুশাসনের এক অনন্য নিদর্শন। দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে সাদাকাতুল ফিতর বিধিবদ্ধ হয়। রমজান মাসে ঈদের আগে ফিতরা পরিশোধ করতে হয়। ফিতরার মধ্যে রয়েছে গরিব-দুঃখীদের আনন্দ। রমজান, ফিতরা ও ঈদ একই সূত্রে গাঁথা। ফিতরা আদায় করা উত্তম।



ফিতরা কত টাকা ২০২৩

এ বছর ফিতরা কত টাকা হবে তা জেনে নিন। ফিতরার হার জন প্রতি হচ্ছে- ২৬৪০ টাকা। অর্থাৎ ফ্যামিলির প্রত্যেকটা সদস্যদের জন্য ২৬৪০ টাকা ধরা হয়েছে ফিতরা হিসেবে। আপনাকে আপনার ফ্যামিলির প্রত্যেকটা সদস্যের জন্য জন প্রতি ২৬৪০ টাকা করে আদায় করতে হবে। আর সর্বনিম্ন ধরা হয়েছে ১১৫ টাকা। তার মানে সর্বোচ্চ ফিতরা ২৬৪০ টাকা দিতে হবে, যদি আপনি তা ব্যর্থ হন তাহলে অবশ্যই সর্বনিম্ন আপনাকে ১১৫ টাকা করে জনপ্রতি ফিতরা দিতে হবে। এ হার নির্ধারণ করেছে জাতীয় ফিতরা কমিটি। ফিতরা নিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাইতুল মোকাররমের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভায় সব সময় ফিতরা নিয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উক্ত সভার মাধ্যমে এই ফিতরা নির্ধারণ করা হয়। গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ফিতরার পরিমাণ ছিল সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ 75 ও 2310 টাকা। নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে আপনাকে অবশ্যই ফিতরা আদায় করতে হবে। এখন হয়তো আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, নিসাব বলতে কি বুঝায়? তো সেই বিষয়েও আমি আপনাদেরকে বলছি।

নিসাব কি

নিসাব: নিসাব হলো একটি ইসলামী পরিভাষা। এর অর্থ হল শরীয়ত নির্ধারিত নূন্যতম সীমা বা পরিমান। নিসাব পরিমাণ হলো, নিত্য প্রয়োজনীয় স্বামগ্রী বা নিত্যদিনের প্রয়োজন পূরণ বাদ দেয়ার পর সাড়ে ৫২ তোলা পরিমাণ রুপা অথবা সাড়ে সাত তোলা পরিমাণ স্বর্ণ থাকা বা এর সমমূল্যের ব্যবসার মালিক হওয়া।

সাড়ে ৫২ তোলা হচ্ছে ৬১২.৩৬ গ্রাম।

সাড়ে সাত তোলা হচ্ছে ৮৭.৪৮ গ্রাম।


আরো জানতে ক্লিক করুন:

ইউটিউবিং নাকি ব্লগিং, কোনটা করবেন


ইসলামিক শরিয়া মতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক উন্নত মানের আটা, কিসমিস, খেজুর, যব ও পনির যেকোনোটি দিয়ে ফিতরা দেয়া যাবে। তো নিচে একটি ছবি দেওয়া হল। ছবিটি দেখে আপনি খুব সহজে জানতে পারবেন ফিতরা কত টাকা, পিকচার বলা আছে, ফিতরা দেওয়ার নিয়ম, সাধারণ রেটে ফিতরার পরিমাণ ও ফিতরা দিতে হয় কিসের উপর ভিত্তি করে।


উপরের ছবিতে গম, খেজুর, যব, কিসমিস ও পনিরের বর্তমান বাজার মূল্য দেওয়া আছে। মুসলমানরা উপরের ছবিটি দেখে খুব সহজে ফিতরা আদায় করতে পারবেন। যদি তারা টাকা আদায় করতে চান ফিতরা হিসেবে, তাহলে ওপরের প্রোডাক্টগুলোর বর্তমান বাজার মূল্য হিসেবে যা পরিমাণ টাকা আসে তা ফিতরা হিসেবে আদায় করা যাবে। এতে কোন সমস্যা হবে না।

ফিতরা দেওয়ার নিয়ম:

রমজান মাস সিয়াম সাধনার মাস। এই মাসে প্রত্যেকটা বিচ্যুতি গুলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়ার আশায় অবশ্যই ঈদের আগে রমজান মাসে ফিতরা আদায় করতে হয়। ফিতরা দুই পরিমাপে পাঁচ জিনিস আপনি আদায় করতে পারবেন। সেগুলো হচ্ছে খেজুর, পনির, কিসমিস, যব, গম। এগুলোর মধ্যে গমের পরিমাণ কোন অর্ধ সা,  আর বাকিগুলোর পরিমাপ হল এক সা। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী উপরে উল্লেখিত প্রডাক্টগূলোর কোন একটি দিয়ে ফিতরা আদায় করা যায়। নিচে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো:

কিসমিস: কিসমিসের পরিমাপ এক সা। ওজনের হিসাবে তিন কেজি ৩০০ গ্রাম। স্যার বর্তমান বাজার মূল্য হচ্ছে মাত্র ১৫০০ টাকা।

যব: যবের পরিমাপ হবে এক সা। পাল্লা দিয়ে হিসাব করলে তিন কেজি ৩০০ গ্রাম যার বর্তমান মূল্য হচ্ছে ২৭০ টাকা।

গম অথবা আটা: গম ওয়েটের পরিমাণ হিসেবে হবে অর্ধ সা। ওজন হিসাবে মাত্র এক কেজি ৬৫০ গ্রাম। তবে 200 বা সের হিসেবে 2 কেজির মূল্য আদায় করা সবচেয়ে উত্তম। তার বর্তমান বাজার মূল্য হচ্ছে ৭০। সময় অনুযায়ী দাম কম বেশি হতে পারে। তাই অবশ্যই আপনারা বাজার মূল্য দেখে নিবেন।

পনির: পনিরের পরিমাপও একই রকম। আপনি কেজি হিসেবে যদি হিসাব করতে চান তাহলে হবে তিন কেজি ৩০০ গ্রাম। এর বর্তমান বাজার মূল্য হচ্ছে ২২০০ টাকা। কিন্তু যব, কিসমিস, খেজুর ও পনিরের ক্ষেত্রে চার ক্ষেত্রে মূল্য পরিশোধ করা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য উত্তম। মনে করেন কোন ফ্যামিলিতে সদস্য সংখ্যা বেশি, অনেক বড় ফ্যামিলি। সেক্ষেত্রে ফ্যামিলিতে যদি একজনও দায়িত্বশীল থেকে থাকে, তাহলে সেই একজনকেই ফ্যামিলির সবার ফিতরা পূরণ করতে হবে। আর যদি পূরণ করা না হয় তাহলে এর জন্য গুনাহগার হতে হবে। কাজেই এদিকটাতে অবশ্যই সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

শেষ কথা

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা, আমাদের আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা ফিতরা, ফিতরা অর্থ কি, ফিতরা কত টাকা ২০২৩ সালে, ফিতরা দেওয়ার নিয়ম কি, ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দেবেন যাতে তারাও ফিতরা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে। কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে প্রশ্ন করবেন। আমরা খুব শীঘ্রই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।আজকে এই পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।


আরো জানুন:

দারাজে কিভাবে অ্যাফিলিয়েট একাউন্ট করে মাসে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা ইনকাম করবেন


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন