তাহাজ্জুদ নামাজ | তাহাজ্জুদ নামাজের সময় | তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

 তাহাজ্জুদ নামাজ | তাহাজ্জুদ নামাজের সময় | তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা, আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব তাহাজ্জুদ নামাজ কি, তাহাজ্জুদ নামাজের সময় কখন এবং তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম কি এসব বিষয় নিয়ে। তো কথা না বাড়িয়ে আমাদের আলোচনায় চলে যাচ্ছি। শুরু করলাম আমাদের আজকের আলোচনা।

তাহাজ্জুদ নামাজ আমাদের প্রত্যেকের মুসলিমদের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই নামাজ আদায় করার মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর খুবই কাছাকাছি সাক্ষাতে চলে যান। যখন গভীর রাত হয় তখন বান্দারা তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করে আল্লাহর কাছে তাদের মনের সকল কথা খুলে বলেন। আল্লাহ পাক এই নামাজ আদায় করলে খুবই খুশি হন এবং বান্দার মনের সকল নেক আশা গুলো পূর্ণ করে দেন। কিন্তু এই নামাজ খাঁটি নিয়্যাত এবং খাঁটি মনে পড়তে হবে অবশ্যই আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। তো কিভাবে এই নামাজ আদায় করবেন এবং এই নামাজ কখন পড়বেন এবং এই নামাজ সঠিক নিয়মে কিভাবে আদায় করবেন তা অবশ্যই আপনাদের জানা খুবই জরুরী। তো নিচে এই ব্যাপারে বিস্তরভাবে আলোচনা করা হলো:

তাহাজ্জুদ নামাজ কী:

প্রথমেই আমাদেরকে জানতে হবে তাহাজ্জুদ নামাজ কী? তাহাজ্জুদ মানে ঘুম ত্যাগ করা। অর্থাৎ আপনি মাঝরাতে নামাজ আদায় করবেন আপনার ঘুম ত্যাগ করে। আপনি যদি রাতে ঘুমিয়েও থাকেন তাহলে আপনি গভীর রাতে অর্থাৎ মাঝরাতে উঠে আপনাকে নামাজ আদায় করতে হবে। আর নামাজ পড়ার সময় অবশ্যই তাহাজ্জুদ সালাতের নিয়ত করবেন। তাহলেই আপনার এই নামাজ আদায় তাহাজ্জুদ নামাজ হিসেবে গণ্য হবে।এই নামায সাধারণত এশারার পরে এবং ফজরের সালাতের আগে আদায় করা হয়। এক কথায়, এই নামাজটি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে পড়া হয়। তাহাজ্জুদ (আরবি: تهجد‎‎), রাতের নামাজ বা কিয়ামুল লাইল নামেও পরিচিত। এই নামাজ অন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মত বাধ্যতামূলক নামাজ না। কিন্তু এর ফজিলত ও গুরুত্ব অনেক। ইসলাম ধর্ম অনুসারীদের জন্য এটি একটি ঐচ্ছিক নামাজ। আমাদের নবীজি তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করতেন এবং তার সাহাবীদেরকে এই নামাজ আদায়ে উৎসাহিত করতেন। 







তাহাজ্জুদ নামাজের সময়়

অনেকে আছেন যারা জানতে চান যে তাহাজ্জত নামাজের সালাত কখন পড়তে হয়। তো এটা জানা অবশ্যই আপনার জরুরী। যেহেতু আপনি তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করেন তাহলে আপনি কখন আদায় করবেন সেটা অবশ্যই আপনাকে জানতে হবে। সহজ কথায় বলতে গেলে এশার সালাত আদায়ের পথ থেকে তাহাজ্জুদ সালাতের সময় শুরু হয়। আর শেষ সময় থাকে ফজরের সালাতের সময় হওয়ার পূর্ববর্তী সময় পর্যন্ত। তাহাজ্জুদ সালাত আদায়ের সর্বোত্তম সময় হচ্ছে ফজরের নিকটবর্তী সময়ে। অর্থাৎ যে সময়টা রাতের এক তৃতীয়াংশ সময় নামে পরিচিত থাকে।

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম

তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তে গেলে আপনাকে অবশ্যই তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম জানতে হবে। নিয়ম কোন কঠিন না। নিচে তাহাজ্জুদ সালাতের নিয়ম সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো:
তাহাজ্জুদ সালাতের নিয়ত আপনি বাংলায় করতে পারবেন। নামাজে দাঁড়ানোর সময় আপনি বলবেন হে আল্লাহ আমি পশ্চিম দিকে কেবলামুখী হইয়া আপনার দরবারে দুই রাকাত তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করতেছি। এইভাবে  তাকবীরে তাহরীমা বলে অর্থাৎ আল্লাহু আকবার বলে নিয়ত করবেন। আবার আপনি চাইলে আরবিতে নিয়ত করতে পারবেন।

সূরা ফাতিহা পড়বেন এবং সেই সুরার পরে যে কোন সূরা মিলিয়ে পড়ে নেবেন। তাহাজ্জত সালাতের সূরা যত বড় করে পড়া যায় তত ভালো। আমাদের নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা দীর্ঘ করে প্রত্যান এবং রুকু এবং সিজদা দীর্ঘ করে দিতেন। কাজেই আমরা তাহাজ্জুদ সালাতের সূরা দীর্ঘ করে পড়ার চেষ্টা করব। এরপর অন্য নামাজের মতই রুকু করে সেজদা করবেন। দুইবার সেজদা করে আবার উঠে দাঁড়াবেন। আবার আগের মতো সুরা ফাতেহা পড়বেন এবং সেই সূরার সাথে মিলিয়ে আরেকটি সূরা পড়ে নেবেন। তারপর আগের মতই রুকু করে সেজদা করবেন। দুইবার সেজদা করে উঠে বসবেন। বসার মধ্যে তাশাহুদ দুরুদ শরীফ এবং দোয়ায়ে মাসুরা পড়ে সালাম ফিরিয়ে নিবেন। যদি এশারের নামাজের পর বিতির পড়ে থাকেন এরপর যদি তাহাজ্জুদ সালাত আদায় করেন তাহলে আর নতুন করে বিতর নামায পড়ার দরকার নেই।

তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাত সংখ্যা

আমাদের নবীজি তাহাজ্জুস সালাত আদায় করতেন দুই রাকাত করে। কখনো তিনি চার রাকাত পড়তাম কখনো তিনি আট রাকাত পত্তন কখনো তিনি ১২ রাকাত পড়তেন। তো আপনারা চাইলে তাহাজ্জুদ সালাত দুই রাকাত পড়তে পারেন। আবার মন চাইলে আপনারা আরো বেশি পড়তে পারেন।

আরো পড়ুন:


ঘুম থেকে ওঠার সম্ভাবনা না থাকলে যেভাবে নামাজ পড়বেন

আপনার কাছে যদি মনে হয় আপনি ঘুম থেকে উঠতে পারবেন না তাহলে আপনার জন্য নামাজ পড়ার আলাদা সিস্টেম রয়েছে।
আপনি চাইলে এশারের নামাজের দুই রাকাত সুন্নত পড়ে এরপর আপনি তাহাজ্জুত সালাত পড়তে পারবেন এবং শেষে বিতর নামাজ আদায় করে নিবেন। এভাবেও আপনার তাহাজ্জুদ সালাত কবুল হবে। এ সম্পর্কে হাদিসও রয়েছে।

আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে হলে রাতে তাহাজ্জুদ সালাত সহ নফল ইবাদতের কোন বিকল্প নাই। আমাদের সকল মুমিন মুসলিমদের উচিত হবে আমরা আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য অবশ্যই রাতে ঘুম থেকে জেগে উঠে তাহাজ্জুত সালাত আদায় করব। হাদিসে ঘোষিত নবীজি সাল্লাল্লাহুু আলাইহি ওয়া  সাল্লামের পড়া দোয়া বেশি করে পড়ুন।
আল্লাহ পাক আমাদেরকে বেশি বেশি করে আমল করার তৌফিক দান করুক। সবাইকে বেশি বেশি করে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার তৌফিক দান করুক। দুনিয়া ও পরকালের কল্যাণ লাভের তৌফিক দান করুক, আমিন।

শেষ কথা 

প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা আমাদের আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা তাহাজ্জুদ নামাজ কি, তাহাজ্জুদ নামাজের সময়, তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। অবশ্যই আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন যাতে করে সেও তাহাজ্জুদ নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে।আজকের আর্টিকেলটি এখানে শেষ করলাম। নতুন আর্টিকেল নিয়ে আবারো ফিরে আসব। আপনারা কি বিষয়ে আর্টিকেল পেতে চান সেটা অবশ্যই জানিয়ে আমাদেরকে কমেন্ট করবেন। তো সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।
 আসসালামু আলাইকুম।

আরো প্রত্যেক ক্লিক করুন:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন