Camera কি || Camera এর ব্যবহার কি ||Camera এর গুরুত্ব
প্রিয় পাঠক, আপনার জন্য খুবই চমৎকার এবং আকর্ষণীয় একটি আর্টিকেল নিয়ে চলে আসছি। আমাদের আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারবেন, Camera কি, Camera এর ব্যবহার কি, ক্যামেরা প্রথম কে আবিষ্কার করেন, ক্যামেরার লেন্স কত প্রকার ও কি কি, Camera এর গুরুত্ব। তো সবাই সুশৃংখলভাবে ধাক্কাধাক্কি না করে সারিবদ্ধভাবে বসুন। আমাদের আজকের আলোচনা আমরা শুরু করলাম।
ক্যামেরার সাথে আমরা সবাই পরিচিত আছি। ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলা হয় এবং ভিডিও করা হয়। বর্তমান স্মার্টফোনগুলো তে উন্নত কোয়ালিটির ক্যামেরা থাকে। সেই স্মার্টফোনের ক্যামেরা দিয়ে অত্যন্ত ভালোভাবে ছবি তোলা যায় এইচডি কোয়ালিটি তে ভিডিও করা যায়। তো ছবি তোলা বা ভিডিও করার জন্য আলাদাভাবে ক্যামেরা অপশনটি রয়েছে। এই ক্যামেরায় শুধুমাত্র ছবি তোলা বা ভিডিও করা হয়। অবশ্যই আমাদের প্রত্যেককে জানতে হবে ক্যামেরা কি। নিচে তার উত্তর দেওয়া হলো।
Camera কি
Camera নামটি লাতিন পদগুচ্ছ কামেরা ওবস্কিউরা থেকে এসেছে, যার অর্থ "অন্ধকার প্রকোষ্ঠ"। ক্যামেরা হচ্ছে একটি আলোকচিত্রগ্রাহী যন্ত্র। কোন দৃশ্যমান স্থির বা গতিশীল চিত্র ধারনের জন্য ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। ক্যামেরা একটি অপটিক্যাল যন্ত্র যা চিত্র ধারণ করতে পারে। আলোক-সংবেদনশীল পৃষ্ঠের উপরে আলো কিভাবে পড়বে তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ক্যামেরার বিভিন্ন প্রক্রিয়া রয়েছে। লেন্স ক্যামেরায় প্রবেশকারী আলোকে আলোকপাত করে এবং অ্যাপারচারের আকারটি বেশি বা কম আলো ক্যামেরায় আসতে দিতে প্রশস্ত বা সংকীর্ণ করা যায়। এতে শাটার প্রক্রিয়াটি ফটো সংবেদনশীল পৃষ্ঠটি আলোর সংস্পর্শে আসার সময় নির্ধারণ করে। স্থির চিত্র, গতিশীল চিত্র, শব্দসহ চিত্র, রঙ্গিন চিত্র প্রভৃতি এর দ্বারা গ্রহণ করা সম্ভব।
ক্যামেরার জন্ম কত সালে
১৮২৬ সালে ইতিহাসে ক্যামেরা একটি মাইলফল ছিলো। এটি ছিলো পৃথিবীর প্রথম ক্যামেরা। আলোকচিত্র ধারনের জন্য সর্বপ্রথম এই দিনে এই কাজটি করেন জোসেফ নাইসপোর নিপস। ক্যামেরার কাজটি করা হয় পাতলা কাঁঠাল বাক্সের ভিতরে বিটুমিন প্লেটে আলোর ব্যবহারের মাধ্যমে।
ক্যামেরা কে আবিষ্কার করেন
প্রথমে ক্যামেরা আবিষ্কার করেন Johann Zahn। আবিষ্কৃত হয় ১৬৮৫ খ্রিস্টাব্দে। এরপর ১৮৮৫ সালের পেপার ফিল্ম আকারে ফটোগ্রাফি ফিল্ম প্রকাশ করেন জর্জ ইস্টমেন্ট। ১৮৮৯ সালে সেলুলয়েডে পরিবর্তন করা হয় ক্যামেরা।
ক্যামেরা কত প্রকার ও কি কি
ক্যামেরা হচ্ছে দুই ধরনের। প্লাস্টিক এবং মেটাল। এই দুই ধরনের ক্যামেরা বর্তমানে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। সর্বোচ্চ সব জায়গায় সাধারণত এক মেগাপিক্সেল থেকে পাঁচ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা একটু বেশি দেখা যায়। ভিডিও দেখা বা ভিডিও রেকর্ড সংরক্ষণ করার জন্য এই ক্যামেরা গুলোর সাথে ডিভিআর বা ভিডিও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এ ছাড়া আরেকটি ক্যামেরা রয়েছে যেটির নাম হচ্ছে ডোম ক্যামেরা। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে নজরদারের জন্য ডোন ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও তৈরি করলে অসাধারণ মানের ভিডিও তৈরি হয়। তাছাড়া রয়েছে কম্প্যাক্ট ক্যামেরা ডিএসএলআর ক্যামেরা, আয়না বিহীন ক্যামেরা, একশন ক্যামেরা।
ডিজিটাল ক্যামেরা কত প্রকার ও কি কি
ডিজিটাল ক্যামেরার চার প্রকার। যেমন ডিজিটাল এস এল আর পয়েন্ট এন্ড সুট ব্রিজ ক্যামেরা এবং ক্যামেরা শুট।
ফিল্ম ক্যামেরা কাকে বলে
যেসব ক্যামেরায় ফিল্ম ব্যবহার করা হয় তাকে ফিল্ম ক্যামেরা বলে। সমস্ত ফিল্ম ক্যামেরাই হচ্ছে এনালগ ক্যামেরা। বিভিন্ন ধরনের ফিল্ম ভিত্তিক স্টিল ক্যামেরা তৈরি করা হয়। যেমন ৩৫ এম এম, ১২০,২২০ এবং বৃহত্তর ৪*৫ এবং ৮*১০, advantix। ফিল্ম মুভি ক্যামেরা হচ্ছে ৪মিঃমি, ৩৫ মিলিমিটার, ১৬ মিলিমিটার। ফিল্মে পরপর ছবি ক্যাপচার করা হয়। এই ক্যামেরা ডিজিটাল ক্যামেরার সাথে বৈসাদৃশ্য।
ভিডিও ক্যামেরা কি ও কত সালে আবিষ্কৃত হয়
যে ক্যামেরার মধ্যে দিয়ে চলমান দৃশ্য ধারণ করা হয় তাকে ভিডিও ক্যামেরা বলে।এই ক্যামেরায় সেলুলয়েড ফিলিম এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে বিভিন্ন তথ্য ধারনের জন্য ব্যবহার করা হয় ছবি ধারনের আগে।
লেন্স ক্যামেরা কাকে বলে এবং এটি কত প্রকার ও কি কি
ক্যামেরার লেন্স আলো আনার জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি একটি নির্দিষ্ট ফোকাল পয়েন্ট। অনেকগুলো গ্লাস প্লেটের সিরিয়াল সিরিজ নিয়ে এই লেন্স গঠিত। সবগুলা প্লেট বাইরের দিকে ও ভিতরের দিকে বাঁকানো থাকে।
ক্যামেরার লেন্স প্রধানত চার প্রকার হয়ে থাকে। নিচে তা বিস্তারিত সহকারে আলোচনা করা হলো:
মাইক্রো লেন্স
এটি এমনি এক ধরনের ক্যামেরার লেন্স যা খুবই ক্লোজআপ মাইক্রো ফটোগ্রাফ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়।
টেলিফটো ক্যামেরা লেন্স
একটি এক ধরনের জুম লেন্স যার একাধিক ফোকাস পয়েন্ট দেখা যায়। এই লেন্সগুলো দূরের কোন বিষয়কে আলাদা করার জন্য খুবই যথেষ্ট পরিমাণ কাজ করে।
ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা লেন্স
বড় একটি জায়গাকে ক্যামেরার ভিতরে ছোট আকারে আনতে এই লেন্স ব্যবহার করা হয়। রাস্তার ফটোগ্রাফি বা ল্যান্ডস্কোপ ফটোগ্রাফির জন্য এই লেন্সগুলো ব্যবহার করা হয়।
স্পেশালিটি ক্যামেরা লেন্স
এই লেন্সটি সাধারণত মোবাইল ফোনে থাকে। আপনার ফটোগ্রাফিকে অনন্য চেহারা বা অনুভূতিতে প্রকাশ করাই হচ্ছে এই লেন্সের কাজ। এই লেন্সের মধ্যে সকল প্রকার Fisheye Lens, Tilt shift lens, Infrared Lens লেন্সগুলোকে স্পেশালিটি লেন্সের মধ্যে নিয়ে আসে।
উত্তল লেন্স কত প্রকার ও কি কি
যে ল্যান্সের মধ্যভাগ মোটা ও দুই পাঁশ সরু তাকে উত্তল লেন্স বলে। দূরবীক্ষণ ও অণুবীক্ষণ যন্ত্রে এই লেন্স ব্যবহার করা হয়। এই লেন্স একগুচ্ছ সমান্তরাল আলোক রশ্মিকে অভিসারী করে থাকে বলে একে অভিসারী লেন্সও বলা হয়। এই লেন্সে আলোক রশ্মিকে একটি বিন্দুতে কেন্দ্র করে আগুন জ্বালানোর কাজেও ব্যবহার করা হয়।
যে লেন্সের একটি তল সমতল এবং অপরটি উত্তল তাকে সমতোল লেন্স বলে।
উত্তল লেন্স সাধারণত তিন প্রকার হয়ে থাকে। যেমন:
১/ উভোত্তোল বাদ দ্বি উত্তল লেন্স:
যেই উত্তল লেন্সের উভয় তলেই অর্থাৎ উপর এবং নিচের তল উত্তল তাকে উভোত্তল লেন্স বলে।
২/অবতলোত্তল বা অবতল উত্তল লেন্স:
যে লেন্সের এক পৃষ্ঠা অবতল ও বিপরীত পৃষ্ঠ উত্তম তাকে অবতল উত্তল বা অবতলোত্তল লেন্স বলে।
৩/ সমতল উত্তল বা সমতলোত্তল লেন্স:
যেই লেন্সের এক পৃষ্ঠ সমতল এবং বিপরীত পৃষ্ঠ উত্তর তাকে সমতল উত্তল বা সমতলোত্তল লেন্স বলে।
Camera এর ব্যবহার ও ক্যামেরার গুরুত্ব
ক্যামেরার ব্যবহার সকলেই আমরা জানি। সাধারণত ছবি তোলা বা ভিডিও করার কাজে ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। অনেকের ডিএসএলআর ক্যামেরা ব্যবহার করে থাকেন ছবি বা ভিডিও করার জন্য। বিয়ে বাড়ি তোর বিভিন্ন ভিডিও বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ভিডিও করার জন্য বিভিন্ন দলে বিভিন্ন ধরনের ক্যামেরা ব্যবহার করে থাকেন। মুভির শুটিং সেটে ক্যামেরা ব্যবহার করা হয় ভিডিও করার জন্য। তাছাড়া আজকাল সকল অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনে ক্যামেরা থাকে। বিশেষ করে দামী স্মার্টফোনগুলোতে অনেক হাই রেজুলেশন সম্পন্ন ক্যামেরা থাকে, যে ক্যামেরা দিয়ে অনেক দূরের জিনিস সামনে নিয়ে স্পষ্ট আকার এবং বড় আকারে দেখা যায়। লেন্স সমৃদ্ধ ক্যামেরা দিয়ে দূরের কোন লেখা সামনে এনে স্পষ্ট আকারে পড়া যায়। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ছবি বা ভিডিও আপলোড করার জন্য ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও বা ছবি তৈরি করে তা আপলোড করা হয়। অনেকে ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে তা কাগজের মধ্যে বাঁধিয়ে বাসায় বা দেয়ালে রেখে দেন ভবিষ্যতের স্মৃতি হিসেবে। বিভিন্ন অন্যায় অপরাধ মূলক কাজ ভবিষ্যতের প্রমাণস্বরূপ হিসেবে রাখার জন্য ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করা হয় বা ছবি তুলে রেখে দেওয়া হয়। কোন সন্ত্রাসীকে অথবা কোন চাঁদাবাজিকে অথবা কোন কুখ্যাত খুনিকে তার অপরাধের ভিত্তিতে ধরার জন্য তার কৃতকর্ম গুলা ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করে অথবা ছবি তুলে রেখে দেওয়া হয়। যার ফলে অপরাধীকে তার কৃতকর্মের জন্য উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করতে কোন ধরনের বাধার সম্মুখীন হতে হয় না। তাহলে বোঝা যাচ্ছে ক্যামেরার গুরুত্ব কতটা অপরিসীম।
শেষ কথা:
প্রিয় পাঠকগণ আমাদের আজকের এই আলোচনা থেকে আপনারা খুব সহজে জানতে পেরেছেন ক্যামেরা কি ক্যামেরা কে আবিষ্কার করেছেন ক্যামেরা কত সালে আবিষ্কৃত হয় ক্যামেরার লেন্স কি ক্যামেরার লেন্স কত প্রকার ক্যামেরার ব্যবহার ও গুরুত্ব ইত্যাদি সম্পর্কে। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিবেন যাতে সেও ক্যামেরা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে। আটিকাল ঠিক কেমন হয়েছে তা জানিয়ে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে ছোট্ট করে একটু কমেন্ট করে যাবেন যাতে আমরা ভবিষ্যতে এ ধরনের আর্টিকেল পাবলিশড করতে আরো উৎসাহিত হতে পারি। আর আমাদের আর্টিকেলে কোন প্রকার ভুল ভ্রান্তি থাকলে তা অবশ্যই আমাদেরকে জানাবেন যাতে আমরা ভবিষ্যতে সংশোধন হওয়ার জন্য চেষ্টা করতে পারি। আজকের আরটিকাল এখানেই শেষ করলাম। ফিরে আসবো পরবর্তীতে নতুন কোন আর্টিকেল নিয়ে। সবার সুস্থতা ও মঙ্গল কামনা করছি। ভালো থাকবেন এমন সুস্থ থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।