পুরুষ বন্ধ্যাত্ব কি || পুরুষ বন্ধ্যাত্ব কেন হয় || পুরুষ বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায়
আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠকগণ, আপনারা যারা স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ পেতে চান তাদের জন্য আজকে নিয়ে এসেছি একটি সুখবর। আমাদের দেশের আনাচে-কানাচে অনেকেই আছেন পুরুষ বন্ধ্যাত্ব রোগে ভুগছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে জানিয়ে দেব পুরুষ বন্ধ্যাত্ব কি, পুরুষ বন্ধ্যাত্ব কেন হয়, পুরুষ বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায়, পুরুষ বন্ধ্যাত্বের ধরণ, লক্ষণ, প্রতিকার, প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সম্পর্কে। চলুন আমাদের আলোচনা শুরু করি।
পুরুষ বন্ধ্যাত্ব কি
পুরুষ বন্ধ্যাত্ব নিয়ে যাবতীয় কথা বলার আগে প্রথমে আপনাকে জানতে হবে পুরুষ বন্ধ্যাত্ব কি অর্থাৎ পুরুষ বন্ধ্যাত্ব বলতে কি বুঝায়। তো পুরুষ বন্ধ্যাত্ব এমন একটি রোগ যা নিয়ে কেউ সাধারণত কথা বলতে চায় না। সবাই বিষয়টি গোপনে রেখে দেয় কিন্তু মুখে প্রকাশ করে না। পুরুষের সন্তান জন্মদানে অক্ষমতাকেই বলা হয় পুরুষ বন্ধ্যাত্ব। অর্থাৎ কোন পুরুষ যদি সন্তান জন্ম দানে অক্ষম হয়ে থাকে তার থেকে যদি সন্তানের আশা করা না যায় তাহলে তার পুরুষ বন্ধ্যাত্ব হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। পুরুষ বন্ধ্যাত্বের মূল কারণ হচ্ছে বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ কম হওয়া।
পুরুষ বন্ধ্যাত্ব কেন হয়
পুরুষের বীর্যে যদি শুক্রানু কম হয়ে থাকে তাহলে তার পুরুষ বন্ধ্যাত্ব হয়। চিকিৎসকদের মতে পুরুষের বীর্যের প্রতি মিলিমিটারের শুক্রানুর পরিমাণ যদি ১৫ মিলিয়ন বা দেড় কোটির কম হয়ে থাকে তাহলে প্রাকৃতিকভাবে সেই পুরুষ সন্তান জন্মদানে অক্ষম। তখনই তার পুরুষ বন্ধ্যাত্ব হয়েছে বলে নিশ্চিতভাবে বিবেচনা করা হয়। আর যদি প্রতি মিলিমিটারে 15 মিলিয়ন এর অধিক পরিমাণ শুক্রাণু থাকে তখন তাকে স্বাভাবিক পর্যায় বলা হয়। বিশ্বের আনাচে কানাচে যেসব দম্পতির সন্তান হয় না তাদের এক-তৃতীয়াংশের ক্ষেত্রে দেখা যায় এই সন্তান না হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে পুরুষ বন্ধ্যাত্ব। অর্থাৎ স্বামীর শুক্রাণুর মান নিম্ন পর্যায়ের ও বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ অল্প। অধিক তাপমাত্রা, মাদক সেবন ও অতিরিক্ত চাপা অন্তর বাস পুরুষের শুক্রাণুতে বিরূপ পরিমানে প্রভাব ফেলে। যার ফলে পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যায় এবং পুরুষ বন্ধ্যাত্বের সৃষ্টি হয়। ফলে সেই পুরুষ সন্তান জন্মদানে অক্ষম হয়ে যায়।
বন্ধ্যাত্ব কোন ভিটামিনের অভাবে হয়
অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগে বন্ধ্যাত্ব কোন ভিটামিনের অভাবে হয়। আজকে আমি তাদের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেব। সাধারণত ভিটামিন এ, বি ১২, ভিটামিন ই সহ আরো কিছু ভিটামিন এর অভাবে মানব শরীরে বন্ধ্যাত্ব রোগ হয়। তাই বন্ধ্যাত্ব দূর করতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার এবং পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। শাকসবজি বেশি পরিমাণে খেতে হবে। আর সকল খাবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে ধুয়ে খেতে হবে।
পুরুষ বন্ধ্যাত্বের ধরণ
বন্ধ্যাত্ব সাধারণত দুই প্রকার হয়ে থাকে। প্রাথমিক বন্ধ্যাত্ব ও সেকেন্ডারি বন্ধ্যাত্ব।
পুরুষ বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ
পুরুষদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের সুস্পষ্ট লক্ষণ রয়েছে নিচে তা উল্লেখ করা হলো:
১/বীর্যপাত জনিত সমস্যা, বীর্যের স্বল্পতা এবং বীর্যের শুক্রাণুর পরিমাণ কমে যাওয়া,
২/যৌন মিলনে অনীহা বা সমস্যা দেখা দেয়,
৩/ শরীরে বা মুখের বিভিন্ন অংশের পুরুষালী লোম কমে যাবে,
৪/ জন্মগত ভাবে ঘ্রাণ গ্রহণে অক্ষমতা দেখা দেবে,
৫/স্তনের অস্বাভাবিক বিকাশ ও গাইনোকোম্যাস্টিয়া দেখা দিবে,
৬/অন্ড থলিতে ব্যাথা হবে এবং অন্ড থলি ফুলে যাবে
৭/ বারবার শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ দেখা দেবে,
৮/ হরমোন বা ক্রোমোসোমাল অস্বাভাবিকতার অন্যান্য লক্ষণ।
পুরুষ বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায়
প্রত্যেক মানুষ চায় বিয়ে-শাদী করে নতুন সংসার ধরার জন্য। তাদের সংসারে সন্তান আসবে এবং সেই সন্তান ঘিরে তাদের থাকবে সমস্ত ব্যস্ততা। সন্তানকে নিয়ে তারা নানান ধরনের স্বপ্ন দেখবে এবং আর বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের উপর ভরসা করবে।
পুরুষ বন্ধ্যাত্ব যদি হয়ে থাকে তাহলে তা অবশ্যই দূর করার উপায় রয়েছে। আপনি চাইলে প্রাকৃতিকভাবে এই উপায়টি দূর করতে পারবেন অথবা কিছু ওষুধ সেবন এর মাধ্যমে এই রোগটি দূর করতে পারবেন। সেই সাথে আপনাকে আপনার জীবন যাত্রার মানে কিছুটা পরিবর্তন অবশ্যই আনতে হবে। নিচে পুরুষ বন্ধুত্ব দূর করার উপায় গুলো উল্লেখ করা হলো:
প্রাকৃতিক ভাবে পুরুষ বন্ধুত্ব দূর করার উপায়
আপনাকে সব সময় অ্যান্টি আক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। কারণ এই খাবার শরীরের জনন গ্রন্থিগুলোকে আক্রমণকারী ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও পদার্থগুলোকে ধ্বংস করে এবং আপনার প্রজনন ক্ষমতা অনেক পরিমাণে বাড়িয়ে দেয়। এছাড়া সব সময় যেকোনো ধরনের সবজি খাওয়ার চেষ্টা করবেন। তার পাশাপাশি ভিটামিন ই এবং সি সমৃদ্ধ খাবার অবশ্যই খাবেন। সকালের খাবার চেষ্টা করবেন একটু বেশি করে খাওয়ার জন্য। সুস্থ শরীর রাখতে হলে অবশ্যই দিনের প্রথম ভাগের খাবারটা আপনাকে ভালো পরিমান এবং বেশি পরিমাণে খেতে হবে। বিয়ের পরপরই চেষ্টা করবেন খাবারের কিছুটা কন্ট্রোল আনার জন্য। পসেসড ফুড এবং যেসব খাবারে বেশি পরিমাণে ফ্যাট আছে সেসব খাবার অবশ্যই এড়িয়ে চলবেন। শরীরে ইনসুলিনের লেভেল কমানোর জন্য কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার কম খাবেন।
পুরুষ বন্ধ্যাত্বের প্রতিরোধ
বন্ধ্যাত্ব কখন বা কি কারনে হয় সেই বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সাধারণত ডিম্বক স্ফুটনের সময় অধিক পরিমাণে সহবাস করলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তো এই বিষয়টা কখনো করা যাবে না। পুরুষদের জন্য অবশ্যই নেশা জাতীয় দ্রব্য বন্ধ্যাত্বের জন্য ব্যাপকভাবে দায়ী। তাই অবশ্যই অ্যালকোহল বা তামাক জাত এক কথায় নেশা জাত দ্রব্য থেকে দূরে থাকতে হবে। আবার এমন কোন ওষুধ সেবন করা যাবে না যেগুলা বন্ধ্যাত্ব তৈরিতে ব্যাপক পরিমাণে অবদান রাখে। তাছাড়া শিল্পাঞ্চল গুলো যে পরিবেশে থাকে সেই পরিবেশ থেকে দূরে থাকাই ভালো। কারণ এসব পরিবেশে থাকলে বন্ধ্যাত্ব হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। শিল্পের কোন প্রকার রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে না আসাই ভালো। এছাড়া আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন। ব্যায়ামের কারণে আপনার বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ বাড়বে।
পুরুষ বন্ধ্যাত্বের প্রতিকার
বন্ধ্যাত্ব প্রতিকার করতে হলে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে যে বন্ধ্যাত্ব কেন হয়। তো বন্ধ্যাত্ব কেন হয় তা আমরা ইতিমধ্যে আমাদের পূর্বের আলোচনায় উল্লেখ করেছি। তা দেখে নেবেন। এখন আমরা আলোচনা করব বন্ধ্যাত্বের প্রতিকার গুলো কি কি। তো নিচে বন্ধ্যাত্বের প্রতিকার সম্পর্কে উল্লেখ করা হলো
১/ অতিরিক্ত রাত জাগা যাবে না,
২/সকল অনিয়ম থেকে সরে আসতে হবে এবং যা কিছু করবেন রুটিন অনুযায়ী করবেন।
৩/ সব সময় পুস্টিকর খাবার খাবেন
৪/ছোটবেলার বদ অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
৫/ ঔষধের সেবনের মাধ্যমে আপনি চাইলে শুক্রানুর পরিমাণ বাড়াতে পারবেন
৬/ সব সময় ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা করবেন।
৭/ শাকসবজি বেশি পরিমাণে খাবেন।
৮/সকল খাবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবে খাবেন এবং ফলমূল ও শাকসবজি ভালোভাবে ধুয়ে নেবেন।
বন্ধ্যাত্ব প্রতিকারের আরো উপায় রয়েছে যেগুলো নিম্নরূপ:
১/ মাদকদ্রব্য বর্জন: যারা মাদকদ্রব্য সেবন করে থাকেন তাদেরকে অধিক পরিমাণে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ আপনারা অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন করে থাকেন যেটি বন্ধ্যাত্ব হওয়ার অন্যতম একটি কারণ। অতিরিক্ত অ্যালকোহল খাওয়া অবশ্যই কমাতে হবে। কারণ এগুলা পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ কমিয়ে দেয়। তো বীর্যে শুক্রানুর পরিমাণ সঠিকভাবে রাখতে হলে মাদকদ্রব্য আপনাকে অবশ্যই বর্জন করতে হবে।
২/সহায়ক প্রজনন পদ্ধতি: পুরুষ চাইলে সহায়ক প্রজনন পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারে। এই অবস্থায় ডিম্বানুকে দেহের বাইরে নিষিদ্ধ করে যে পদ্ধতির মাধ্যমে প্রজনন করানো হয় তাকে সহায়ক প্রজনন পদ্ধতি বলে। এসব পদ্ধতি গুলোর মধ্যে হলো ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন, ইন্ট্রোসাইটোপ্লাজমিক ইত্যাদি।
৩/ ঔষধ সেবন করা: আপনার যদি বন্ধ্যাত্ব হয়ে থাকে তাহলে আপনি ঔষধ সেবন করতে পারেন। কারণ ওষুধ সেবন করার মাধ্যমে আপনার বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ বৃদ্ধি করা যাবে এবং শুক্রানু শক্তিশালী হবে। যার ফলে আপনি সন্তান জন্মদানে সক্ষম হবেন।
৪/ সার্জারি: পুরুষের প্রজনন সমস্যায় সার্জারি ব্যবহার করা যেতে পারে। এ অবস্থায় সরাসরি অন্ডকোষ থেকে শুক্রাণু নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রজনন করানো যায়। ফলে সেই পুরুষের সন্তান লাভ হয়।
৫/ খাদ্যাভাস: পুরুষের খাদ্যাবাসে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে। পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার ফলমূল ও শাকসবজি গ্রহণ করতে হবে। সব খাবারে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থাকতে হবে।
৬/ ওজন নিয়ন্ত্রণ করা: পুরুষকে অবশ্যই তার ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ওজন বেশি পরিমাণে বাড়তে দেওয়া যাবে না। একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে ওজন থাকতে হবে।
৯/ জীবন আচরণ: আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাহলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
বন্ধ্যাত্ব নিয়ন্ত্রণ করে যেসব খাবার
পালংশাক: শুক্রানুর জন্য দরকার হচ্ছে ফোলিক এসিড। এই ফলিক এসিডের সংখ্যা কমতে থাকল বির্যে শুক্রানো সংখ্যা কমে। তাই প্রচুর পরিমাণে পালংশাক খেতে হবে। পালং শাকে রয়েছে অধিক পরিমাণে ফোলিক এসিড। এই এসিড শুধু বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণই বাড়ায় না শুকানোর চলাফেরা এবং গতি বৃদ্ধি করে।
ব্রোকলি: পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্যই ব্রোকলি সবজি খুবই দরকারি। পুরুষ অথবা নারীর শরীরের উর্বরতা শক্তি বাড়াতে ব্রোকলির কোন জুরি নেই। নিয়মিত ব্রোকলি খেলেঅঅঅ শরীরের স্পার্ম কাউন্ট প্রায় ৭০ শঅতাংঅঅঅশ বৃদ্ধি পায়। এইসব যেতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন বি৯ বা ফোলিক এসিড যা শুক্রাণুর কর্ম ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
বেদানা: পীরজের উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধির জন্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুবই জরুরী। বেদানা রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ব্রিজের উর্বরতা শক্তি খুব সহজেই বৃদ্ধি করে। চিকিৎসকদের মতে প্রতিদিন নিয়মিত বেদানার রস খেলে পুরুষ ও নারীদের উর্বরতা শক্তি অনেকটাই বৃদ্ধি পায়।
কলা: চিকিৎসকদের মতে কলা রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বি১ ও সি যা শক্তিশালী শুক্রানু উৎপাদনে সহায়তা করে। নারীদের উর্বরতা যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয় পুরুষের উর্বতায় ততটা গুরুত্ব দেওয়া হয় না। অথচ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পুরুষের উর্বরতার কারণে বন্ধ্যাত্বের সৃষ্টি হয়। কাজেই পুরুষের দিখকটা তেও নজর দেওয়া খুবই জরুরী।
ডিম: বান্দা তো দূর করার ডিম খুবই উপকারী একটি খাবার। ডিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই, যা শুক্রাণুর পরিমাণ ই বৃদ্ধি করে না , কার্যকারিতা ও বাড়ায়। আপনি যদি নিয়মিত ডিম খেতে পারেন তাহলে আপনার শুক্রানুর সক্রিয়তাও দিনের পর দিন বাড়তে থাকবে।
ডার্ক চকোলেট: বন্ধ্যাত্ব দূর করতে ডার্ক চকলেট বিশেষ পরিমানে ভূমিকা রাখে। এই চকলেট রয়েছে অ্যাসিড এল-আর্জিনিন এইচসিএল। ইহা পুরুষের বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা এবং কর্ম ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। তাই আপনার জন্যই বন্ধ্যাত্ব রোগ হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি নিয়মিত ডার্ক চকলেট খাওয়ার চেষ্টা করবেন।
রসুন: পুরুষের উর্বরতা বাড়ানোর জন্য রসুন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রসুনের রয়েছে ভিটামিন বি৬ ও সেলেনিয়াম, যা হরমোনের উর্বরতার পরিমাণ বাড়ায়।
আখরোট: পুরুষের উর্বরতা বাড়াতে আখরোট খুবই দরকারি। আখরোটা রয়েছে ওমেগা ৩-ফ্যাটি অ্যাসিড এবং আলফা-লিনোলেনিক অ্যাসিড, যা পুরুষের উর্বরতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। আবার এতে আরো অধিক পরিমাণে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বহু মূল্যবান মাইক্রো নিউট্রিয়েন্টস। এগুলোও পুরুষের উর্বরতা শক্তি বাড়ানোর জন্য খুবই দরকারী।
পুরুষের বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়ায় যেসব খাবার
আপনি যদি বন্ধ্যাত্বের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি তো খাবার নিয়ন্ত্রণ করে চলবেন অর্থাৎ পুষ্টিকর এবং সুষম খাদ্য খাবেনই, তার পাশাপাশি যেসব খাবার বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়ায়, সেসব খাবার থেকে অবশ্যই আপনাকে দূরে থাকতে হবে। নয়তো আপনার বন্ধ্যাত্ব তো কমবে না বরং পর্যায়ক্রমে বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি আরো অধিক পরিমাণে বাড়তে থাকবে। আপনাকে অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ফ্যাট জাতীয় খাবার কখনোই খাবেন না। এছাড়া মদ্যপান করা যাবে না। ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। যেকোনো প্রকার নেশা থেকে দূরে থাকতে হবে।
পুরুষ বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা
পুরুষ বন্ধ্যাত্ব যদি কখনো কারো হয়ে থাকে তাহলে এই রোগ নিয়ে কখনো বসে থাকলে হবে না। কারণ এটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মতে মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলে। এই বন্ধ্যাত্বের কারণে পুরুষ যেহেতু সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম তাই সে তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আশা কখনোই করতে পারে না। কাজেই এই বন্ধ্যাত্ব হয়ে থাকলে অবশ্যই এই বন্ধুত্বের চিকিৎসা করাতে হবে। নিচে পুরুষ বন্ধুত্বের চিকিৎসা গুলো উল্লেখ করা হলো:
যদি কোন দম্পতির সন্তান না হয় তাহলে স্ত্রীর পাশাপাশি স্বামীরও কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করার দরকার। পরীক্ষাগুলো হলো রক্তের শর্করা পরীক্ষা, সিমেন এনালাইসিস, সংক্রমণ ইত্যাদি। সিমেন এনালাইসিস এর মাধ্যমে শুক্রাণুতে বীর্যের পরিমাণ, গঠনগত আকৃতি ও চলাফেরা নির্ণয় করা যায়। অনেক সময় প্রাকৃতিকভাবে বা অন্য কোন সংক্রমণের কারণে শুক্রানু চলাচলের নালিটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন অস্ত্র পাচার করতে হয়। হরমোনের টেস্ট ওস্টেরনের অভাব থাকলে প্রয়োজনে ইনজেকশন নিয়ে শুক্রানুর পরিমাণ বৃদ্ধি করা যায়। যদি অতীতে বেসিকটোমি করা থাকে তাহলে পূণঃ সংযোগের মাধ্যমে প্রজনন ক্ষমতা আবার ফিরিয়ে আনা যাবে। আর একটি বিষয় অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে, যদি জিনগত বা ক্রোমোজোমালের ক্ষতির কারণে শুক্রাশয় নষ্ট হয়ে যায় তাহলে উন্নতির কোন সম্ভাবনা নাই। শুক্রাণুর সংখ্যা, আকার ও চলমান ক্ষমতার ত্রুটি থাকলে স্বল্প পরিসরে উন্নতি লাভ করা সম্ভব।
পুরুষ বন্ধ্যাত্ব হোমিও চিকিৎসা
পুরুষ বন্ধ্যাত্ব হলে হোমিও চিকিৎসা অনেকটাই উপকারে আসে। চিকিৎসা করতে হলে অবশ্যই বন্ধ্যাত্ব কি কারণে হয়েছে বা কেন হয়েছে সেটা আগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করতে হয়। নির্ণয় ব্যতীত কখনোই কোন চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ পুরুষ বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসাটি অত্যন্ত কঠিন চিকিৎসা। বন্ধ্যাত্বের কারণ জানা না থাকলে কোন মতে চিকিৎসা ডাক্তার দেবে না। পরীক্ষা ব্যতীত যদি রোগীকে কোন ঔষধ দেয়া হয় তাহলে দেখা যাবে যে, রোগের জন্য প্রচুর পরিমাণে ওষুধ রয়েছে। তখন কোন ওষুধটি দিলে সবচাইতে ভালো হবে তা কিন্তু বুঝা যায় না। আর যদি রোগীর বন্ধ্যাত্বের কারণটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রিপোর্টের মাধ্যমে জানা যায় তাহলে সেই রিপোর্ট দেখে একজন হোমিও চিকিৎসক রোগীকে সঠিক ঔষধটা দিতে পারেন। যার ফলে রোগীর সঠিক ঔষধ সেবন এর মাধ্যমে খুব সহজেই সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসায় অবশ্যই কারণটি জানা খুবই জরুরী যা একজন চিকিৎসকের চিকিৎসা প্রদান খুবই সহজ করে দেয়। পুরুষ বন্ধ্যাত্ব রোগীর মানসিক অবস্থা, চলাফেরা, দৃষ্টি আকর্ষণ , শারীরিক অবস্থা ইত্যাদি নির্ণয় করা খুবই জরুরী যা বন্ধ্যাত্ব হওয়ার সঠিক কারণটি নির্দেশ করে। কাজেই হোমিও চিকিৎসকের কাছ থেকে সঠিকভাবে সেবাটি নিতে হলে আগে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রিপোর্ট বের করতে হবে। তারপর সেই রিপোর্ট নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে রিপোর্ট দেখার মাধ্যমে হোমিও চিকিৎসক আপনাকে সঠিক চিকিৎসা প্রদান করতে পারবেন। নয়তো আন্দাজ করে চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা পাওয়া কখনো সম্ভব নয়। কাজেই বন্ধ্যাত্বের নির্দিষ্ট করে কোন ঔষধ সম্পর্কে বলা চিকিৎসকের পক্ষে কঠিন হয়ে যাচ্ছে। তো আগে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন তারপর দেখুন চিকিৎসক কি বলে এবং সেইভাবে চিকিৎসকের দিকনির্দেশনা গুলো গ্রহণ করে চিকিৎসা নিন। পুরুষের জীবনী শক্তি যৌন শক্তির দিকে সঠিকভাবে খেয়াল রাখা খুবই প্রয়োজন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক বন্ধুগণ, আমাদের আজকের আলোচনা থেকে আপনারা খুব সহজে জানতে পেরেছেন পুরুষ বন্ধ্যাক্ত কি, পুরুষ বন্ধ্যাত্ব কেন হয়, পুরুষ বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায়, পুরুষ বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসাগুলো কি কি ইত্যাদি সম্পর্কে। আপনাদের আরো কিছু জানার থাকলে আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করবেন এবং আমরা আপনাদেরকে সেই অনুযায়ী আর্টিকেল এর মাধ্যমে জানিয়ে দেব। সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।
আরো জানুন:
থাইরয়েড কি, থাইরয়েড কেন হয় এবং থাইরয়েড দূর করার উপায়