পড়াশোনা | পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায়
আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক বন্ধুগণ, আজকে আমি আপনার সাথে পড়াশোনা মানে কি, আমরা কেন পড়াশোনা করি, বুঝে বুঝে পড়া পড়াশোনা বিষয়ক ওয়েবসাইট, পড়াশোনা করার নেশা, পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায় এবং সারাদিন পড়াশোনা করার উপায় ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করব। আপনি যদি একজন ছাত্র বা ছাত্রী হয়ে থাকেন তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলগুলো আপনার অনেকটাই উপকার বয়ে আনবে। তাই আশা করছি অন্তত আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে পড়বেন। চলুন আমাদের আজকের পড়াশোনার বিষয়ক আর্টিকেলটি শুরু করি।
পড়াশোনা মানে কি
পড়াশোনার সাথে আমরা সবাই জড়িত। পড়াশোনা বলতে বোঝায় পাঠ্যাবাস বা অধ্যায়ন করা। শুধু স্কুল কলেজে যারা যায় তারাই পড়াশোনা করে- বিষয়টা কিন্তু এমন না। যারা স্কুল কলেজে যায়নি তারাও পড়াশোনা করে। স্কুল কলেজে যারা যায় তারা বই-খাতা নিয়ে পড়াশোনা করে। আর যারা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যায় না তারাও পড়াশোনা করে। তো কিভাবে তারা পড়াশোনা করে? যেমন তারা কখনো কখনো পত্রিকা পড়ে, কখনো গল্পের বই পড়ে, কখনো তাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র পড়াশোনা করে। এগুলো কিন্তু পড়াশোনার আওতাভুক্ত।
আমরা কেন পড়াশোনা করি
আমরা যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করি, তাদের জন্য অবশ্যই পড়াশোনা দরকার। কারণ আমরা স্কুল, কলেজে যাই পড়াশোনা করার উদ্দেশ্য। আমাদেরকে ভালোভাবে পড়াশোনা করে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষাগুলোতে ভালো রেজাল্ট অর্জন করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা ভালো পড়াশোনা করব এবং পরীক্ষা আসলে ভালোভাবে পরীক্ষা দিয়ে ভালো রেজাল্ট অর্জন করার চেষ্টা করব। তারপর একটা সময় আমাদের পড়াশোনার জীবন শেষ হবে। এরপর আমাদের চাকুরী জীবন শুরু হবে। তো আমরা যারা সরকারি চাকরির জন্য পরীক্ষা দিব, আমাদেরকে অবশ্যই পড়াশোনা করে প্রিপারেশন নিতে হবে চাকরির জন্য। তারপর চাকরির পরীক্ষা যখন হবে তখন আমরা সবাই ভালোভাবে পড়াশোনা করে ভালোভাবে চাকরির পরীক্ষা দিবে। এরপর আল্লাহ যদি সহায় থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের চাকরি হবে। তো পড়াশোনা মানুষ কেন করে এই প্রশ্নের উত্তরে অনেকটাই বোঝায় যে আমরা প্রত্যেকেই ভালো একটা চাকরি বাকরির জন্য পড়াশোনা করি। এটা অনেকটাই সঠিক বলে ধরে নেওয়া হয়।
কিন্তু আমি মনে করি আমাদের পড়াশোনা করার প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষের মত মানুষ যাতে আমরা হতে পারি। পড়াশোনা করতে হবে আমাদেরকে স্বশিক্ষিত হওয়ার জন্য। পড়াশুনার মাধ্যমে অবশ্যই আমরা সমাজ, দেশ, জাতি সম্পর্কে জানতে পারি। আমরা খুব সহজে বুঝতে পারি একটা সমাজকে উন্নতির পথে নিয়ে যেতে হলে আমাদেরকে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। পড়াশোনা করতে পারলেই আমরা সমাজের অন্যায় অপরাধ সম্পর্কে এবং কোন কাজ করা ভুল তা সম্পর্কে ভালভাবে জ্ঞান অর্জন করতে পারি। তখন আমরা সমাজে ভালো কাজ করার জন্য চেষ্টা করতে পারি এবং খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে পারি। সমাজে যারা খারাপ কাজ করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আমরা কথা বলতে পারি এবং তাদেরকে খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করতে পারি।
পড়াশোনার মাধ্যমে আমরা সমাজে সত্য ন্যায় কে প্রতিষ্ঠা করতে পারি। কারন আমাদের বইতে ভালো মন্দ কাজের বিবরণ এবং সমাজের ভালো কাজ করার জন্য আদেশ, মন্দ কাজ থেকে দূরে থাকার নির্দেশ সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা থাকে। আমরা যদি পড়াশোনা করে ভালো মানুষের মতো মানুষ হতে পারি, সমাজের অন্যায় অনিয়ম দূর করতে পারি এবং নিজেরা অন্যায় থেকে দূরে থাকতে পারি, সমাজের সৎ ভাবে বেঁচে থাকতে পারি, মানুষকে সবসময় ভালো উপদেশ দিতে পারি, বিপদে পড়া মানুষদেরকে সহযোগিতা করতে পারি, সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারি, বৈষম্য দূর করতে পারি তাহলে আমাদের পড়াশোনা হবে প্রকৃত পড়াশোনা। কারণ এই বিষয়গুলোই আমরা পড়াশোনা করার মাধ্যমে খুব সহজে জানতে পার। পড়াশোনা অবশ্যই আমাদেরকে এভাবে ভালো ধরনের কাজগুলোই শিখায়।
কিন্তু কিছু লোক সমাজে পড়াশোনা করে খারাপ কাজে লিপ্ত থাকে এবং দুর্নীতির, চাঁদাবাজি সহ নানান রকম অন্যায় মূলক কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তো তারা পড়াশোনা ঠিকই করেছে, কিন্তু ভালো কিছু না করে খারাপ কর্মগুলো করে যাচ্ছে। এটা কিন্তু পড়াশোনার দোষ না, এটা হচ্ছে তাদের নিজস্ব কর্মের দোষ। এটা কে আমরা কোনমতেই পড়াশোনা বলতে পারি না।
এছাড়া আমরা বিভিন্ন পত্রপত্রিকা পড়ে থাকি। আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ সম্পর্কে জানা, দেশের অধিনের খবরা খবর সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা। এছাড়া দেশ-বিদেশের সকল খবরাখবর সম্পর্কে জানাও হচ্ছে আমাদের পত্র- পত্রিকা পড়ার উদ্দেশ্য। আমরা বিভিন্ন গল্পের বই কবিতার বই পড়ে থাকি। এগুলা হচ্ছে আমাদের বিনোদন অর্জন করার জন্য।
অনেকেই আবার দেশের বাইরে যান পড়াশোনা করার উদ্দেশ্যে। কেউ হয়তো ভালো পরিমাণে ডিগ্রী অর্জন করার জন্য দেশের বাইরে যান। সেখানে গিয়ে পড়াশোনা করেন। আবার কেউ বাংলাদেশে একটা নির্দিষ্ট লেভেলের পড়াশোনা শেষে বিদেশে জান উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য। তো তারাও কিন্তু সেখানে গিয়ে পড়াশোনা করেন।
অনেক রাজনীতিবিদরা আছেন তারা পড়াশোনা করে থাকেন। তারা বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্য প্রদান করেন রাজনীতি বিষয়কে কেন্দ্র করে। বক্তব্য দেওয়ার সময় অবশ্যই রাজনৈতিক জ্ঞান থাকা দরকার। তাই রাজনৈতিক বইগুলো একটু পড়াশোনা করতে হয় কত সালে কি হয়েছে, কোন জায়গায় কি ঘটেছে, কার আমলে কি হয়েছে, কোন জায়গায় কি পরিমান উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে- এগুলা কিন্তু রাজনৈতিক বইতে লেখা থাকে।
পড়াশোনা করার নিয়ম
যারা স্টুডেন্ট আছেন, প্রত্যেকেরই মা-বাবা পড়াশোনার জন্য অধিক পরিমাণে তাগিদ দিয়ে থাকেন। কারণ সবাই বিশ্বাস করেন পড়াশোনা বেশি করে করলে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট অর্জন করা সম্ভব। নতুবা পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট কখনোই অর্জন হবে না। আসলে এটি একটি ভুল ধারণা।
কারণ আপনার সন্তান হয়তো ভালোভাবে পড়াশোনা করার পরও অনেক সময় দেখা যায় পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করতে পারে না। আবার পাশের বাড়ির ছেলেটা ঠিকই অল্প পড়াশোনা করে পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট অর্জন করতে পারে। এখানে একটি পার্থক্য রয়েছে। প্রত্যেকের মেধা বা স্মরণশক্তি এক না। কারো কম থাকে, কারো একটু বেশি। আবার পড়াশোনা করতে গেলে কেউ একটু টেকনিক অবলম্বন করে পড়াশোনা করে। আবার কেউ টেকনিক অবলম্বন করতে পারে না।
তো মেধা বাড়ানোর জন্য অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। যেমন: দুধ, খেতে হবে নিয়মিত। দুধ মেধা বৃদ্ধিতে ব্যাপক পরিমাণ সহায়তা করে। দুধকে বলা হয় আদর্শ খাবার। দুধের ভেতর অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য সকল পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। তাছাড়া বেলপাতা গিয়ে ভেজে গরম করে খাওয়ানো যেতে পারে। এটা খেলে খুব সহজে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়।
অনেক আছেন পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করার জন্য এক টানা পড়াশোনা করে থাকেন। কিন্তু এটা কখনো ঠিক না। বিজ্ঞানীদের মধ্যে কোন কাজ একটানা 30 থেকে 40 মিনিট ধরে করলে এর পর থেকে সেই কাজগুলা ভালো পরিমাণে আয়ত্তে আসে না। তো এজন্য বলা হয় ৩০-৪০ মিনিট পড়াশোনা করার পর একটু ব্রেক নিতে হবে। অর্থাৎ কিছু সময়ের জন্য বিরতি নিতে হবে। এই বিরতির সময় আপনি গজল শুনলেন, অথবা কোন কিছু খাইলেন অথবা একটু গল্প করলেন। এক কথায় এই পাঁচ মিনিটের জন্য মন ভালো থাকার মত ভালো ধরনের সকল কিছু করতে পারেন। এতে আপনার মাথার ব্রেন হালকা হয়, ঠান্ডা থাকে এবং আবার নতুন করে কাজ করা শুরু করে। তারপর আপনি আবার পড়াশোনার কাজে বসতে পারেন।
আবার আমার এমন অনেক বন্ধু দেখছি, যারা বই নিয়ে পড়াশোনা করত সব সময়। আবার তারা যখন খেলতে যেত অথবা কোথাও ঘুরতে যেত তখন একটি কাগজ ছিঁড়ে, সেই কাগজে পড়াশোনার কিছু ট্রফিকস বা সেই সম্পর্কিত লেখা লিখে কাগজটি সাথে করে নিয়ে যেত। তারা রাস্তা দিয়ে হাঁটতে গেলে অথবা কোন জায়গায় বসে থাকলে সেই কাগজটা একটু পর পর চোখের নজরে বুলিয়ে যেত। এরপর কাগজটি আবার পকেটে রেখে মুখ দিয়ে পড়াশোনা করতো হালকা শব্দে। শুধু দূর থেকে দেখা যেত তাদের ঠোঁট নড়তেছে। আর মাথায় সেই পড়াশোনা গুলো যখন যেখানে যেত সেখানে নাড়াচাড়া করত। এতে কিন্তু পড়াশোনা গুলো মাথার ব্রেনে ঝালাই হয় এবং পড়াশোনা মনে থাকে অধিক পরিমাণে।
বুঝে বুঝে পড়া
আপনাকে অবশ্যই বুঝেশুনে পড়াশোনা করা উচিত। খুব ছোটবেলা থেকে অনেকের একটি বদ অভ্যাস হয়ে যায়। সেটি হলো না বুঝে মুখস্ত করা। আপনি যত বড় এক্সপার্ট হোন না কেন, যদি না বুঝে কোন কিছু মুখস্ত করেন পরবর্তী টাইমে সেটা খুব সহজেই ভুলে যাবেন। আপনাকে অবশ্যই যেকোনো পড়াশোনা করার আগে বুঝতে হবে, তারপর পড়তে হবে। আপনি যদি পড়া বুঝে পড়েন তাহলে কিন্তু আপনার সেই পড়া মনে থাকবে বেশি দিন। আর না বুঝে তোতা পাখির মত শুধু মুখস্থ করে যান, তাহলে কিন্তু খুব সহজেই ভুলে যাবেন।
প্রায় সময় অনেককে বলতে শুনি, তাদের নাকি পড়াশোনা ঠিকমতো মনে থাকে না। এর কারণ হচ্ছে পড়াশোনা তারা বুঝে বুঝে পড়ে না, আবার পড়াশোনার সময় অন্যদিকে মনোযোগ থাকে। তাই সেই বিষয়টি তারা যতই পড়ুক, ভুলে যায়। তো সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আপনি যতই বুঝে বুঝে পড়াশোনা করবেন ততই সেই জিনিসটা আপনার মাথার ব্রেন অধিক সময় ধরে রাখতে পারে।
পড়াশোনা বিষয়ক ওয়েবসাইট
পড়াশোনা করার জন্য অনেক ওয়েবসাইট আছে। সেসব ওয়েব সাইটে গিয়ে আপনি পড়াশোনা করতে পারবেন খুব সহজে। আপনি যে বিষয়ে পড়াশোনা করতেছেন সেটার ট্রফিকস লিখে গুগলে সার্চ করবেন। দেখবেন সেই রিলেটেড ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন। তখন ওয়েব সাইটে ক্লিক করলে ওয়েবসাইটের হোম পেজ আপনার কাছে চলে আসবে। আপনি আপনার পছন্দমত ট্রফিকস এর আলোকে পড়াশোনা করতে পারবেন তখন।
এভাবে অনেকেই ওয়েবসাইটে গিয়ে পড়াশোনা করে। আমি নিজেও ওয়েবসাইটে গিয়ে পড়াশোনা করি। কারণ ওয়েবসাইটে গেলে আমি আমার পছন্দ মত আমার পড়াশোনা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাই। তখন সেই ভাবে খুব সহজে আমি পড়াশোনা করতে পারি। আমাকে কোন বইও কিনতে হয় না।
পড়াশোনা করার নেশা
আপনি যখন ঠিক ভাবে পড়াশোনা করবেন না, দিনের বেশিরভাগ সময় আপনি খেলাধুলা করে, দুষ্টামি করে অবসর কাটিয়ে, সময় ব্যয় করবেন তখন কিন্তু পড়াশোনার দিকে আপনার মন বসবে না। এভাবে আস্তে আস্তে পড়াশোনা থেকে আপনার মন উঠে যাবে। আপনার কখনোই মনে চাইবে না বইয়ের সামনে গিয়ে একটু পড়াশোনা করতে। তো পড়াশোনা করার নেশা যদি আপনার মাথায় আনতে চান অবশ্যই কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে।
আপনাকে নিয়মিত রুটিন অনুযায়ী পড়াশোনা করতে হবে। পড়তে মন না চাইলেও মনকে জোর করে পড়ার টেবিলে বসিয়ে রাখতে হবে। প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন পরে শেষ করতে হবে। আগামী দিনের পড়াশোনা গুলো আজকেই শেষ করে নিতে হবে। প্রয়োজনে আরো একটু বাড়িয়ে পড়াশোনা করার চেষ্টা করতে হবে। স্কুলে আগামী দিনের হোম ওয়ার্ক কি দিল সেগুলো চেষ্টা করে আজকের মধ্যেই কমপ্লিট করতে হবে। কোন কিছু না বুঝলে বা না জানলে বন্ধুদেরকে ফোন করে অথবা স্যারদেরকে ফোন করে অথবা google এর বিভিন্ন ওয়েব সাইটে গিয়ে তার সমাধান বের করে পড়াশোনা সু-সম্পন্ন করতে হবে।
তো প্রতিদিন এইভাবে রুটিন অনুযায়ী পড়াশোনা করতে থাকবেন আপনার মন না চাইলেও। তখন দেখবেন পড়াশোনা করতে প্রথমে মন না চাইলেও একটা সময় আস্তে আস্তে পড়াশোনার দিকে আপনার মন বসে যাবে। তখন পড়াশোনা করা আপনার জন্য একটা নেশায় পরিণত হবে। পড়াশুনা না করতে পারলে আপনার কাছে ভালো লাগবে না। তখন পড়াশোনা প্রতিদিন শেষ করতে পারলে আপনার কাছে একটা আনন্দ অনুভব হবে। বলা যায় একেবারেই তখন আপনি পড়াশোনা করার নেশায় পড়ে যাবেন।
পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায়
পড়াশোনায় অবশ্য সবার মনোযোগ থাকে না। পড়াশোনায় যদি সবার মনোযোগ থাকতো তাহলে একটা ক্লাসের ভিতর সবাই ভালো স্টুডেন্ট হতো। কেউ খারাপ স্টুডেন্ট হতো না। যাদের মনোযোগ পড়াশোনায় নাই তাদেরকে চেষ্টা করতে হবে পড়াশোনায় মনোযোগ আনার জন্য।
আপনার মনোযোগ না থাকলে অবশ্যই আপনাকে চেষ্টা করতে হবে পড়াশোনায় মনোযোগ আনার জন্য। যখন আপনি পড়াশোনা করবেন তখন অন্যদিকে আপনার মন নেওয়া যাবে না। আপনার মনোযোগ টা সম্পূর্ণ সেই পড়ার দিকে দিতে হবে। মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করতে হবে। বুঝে বুঝে, দেখে দেখে, হাতার আঙ্গুল প্রত্যেকটা লাইনের ওপর দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। প্রয়োজনে একটা শব্দ করে পড়াশোনা করতে হবে। কারণ শব্দ করে পড়াশোনা করলে বইয়ের লেখার উপর মনোযোগ টা একটু সহজে আকর্ষণ হয় এবং অন্যদিকে মন তেমন চায় না বললেই চলে। এভাবে চেষ্টা করতে করতে ঠিকই একটা সময় পড়াশোনায় আপনার মন চলে আসবে। তখন আপনি পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারবেন। যখন ক্লাসের মধ্যে শিক্ষকরা ক্লাস করাবেন তখনো শিক্ষকদের কথার দিকে এবং পড়াশোনার দিকে আপনি ক্লাসের মধ্যে সবার থেকে অধিক পরিমাণে মনোযোগী হতে পারবেন। এভাবেই আপনাকে পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে।
সারাদিন পড়াশোনা করার উপায়
অনেকে আছেন কোন প্রকার সময় ব্যয় না করে সারাদিন পড়াশুনায় ব্যস্ত থাকেন। আসলে এইভাবে আপনাকে সারাদিন পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হবে না। আবার এমন অনেক বন্ধু দেখছি যারা সকালবেলায় খেয়ে পড়াশুনায় বসতেন এবং পড়াশোনা থেকে উঠতেন রাত দশটার দিকে। দুপুর বেলার খাবারটা পর্যন্ত খেতেন না পড়াশোনার জন্য। কিন্তু এইভাবে পড়াশোনা করা ঠিক না। কারণ আপনি যদি সঠিকভাবে খাওয়া-দাওয়া না করে পড়াশোনা করতেই থাকেন তাহলে একটা সময় আপনার শরীর খারাপ হয়ে যাবে, আপনার ব্রেন দুর্বল হয়ে পড়বে এবং পড়াশোনার দিকে মন বসবে না। তখন আপনার আরো বেশি পরিমাণে ক্ষতি হবে। তো পড়াশোনা করতে হলে আপনাকে অবশ্যই রুটিন মেনে পড়াশোনা করতে হবে।
আপনাকে খাওয়ার সময় টাইম মতো খাইতে হবে এবং পড়াশোনা করার সময় পড়াশোনা করতে হবে। যদি ঘন্টার পর ঘন্টা বই নিয়ে পড়ার টেবিলে বসে থাকেন তাহলে আপনার মনোযোগ কিন্তু আস্তে আস্তে কমে যাবে পড়াশোনা থেকে। আপনার পড়াশোনায় স্বল্প পরিমাণে মনে থাকবে। তাই ৩০-৪০ মিনিট বা ঊর্ধ্বে এক/দেড় ঘন্টা পড়ার পরে আপনাকে ৫ মিনিটের জন্য একটা বিরতি দিতে হবে। এই পাঁচ মিনিট আপনি বাসার বাইরে গিয়ে একটু ঘুরতে পারেন অথবা মন ভালো থাকার জন্য অন্য কিছু করতে পারেন অথবা একটু অবসর বসে থাকতে পারেন অথবা এই সময় একটু হালকা কিছু খেয়ে নিতে পারেন। তারপর পাঁচ মিনিট পরে আবার আপনি পড়াশোনা শুরু করতে পারেন। এইভাবে এই সিস্টেমের রুটিন অনুসরণ করে আপনি সারাদিন পরাশোনা করতে পারেন, তাতে কোন সমস্যা নেই। এতে আপনার অনেকটাই উপকার হবে এবং পড়াশোনা আপনার মনে থাকবে অধিক পরিমাণ। যার ফলে আপনি ক্লাসে এবং পরীক্ষার খাতায় প্রথম সারির স্টুডেন্ট হতে পারবেন।
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক বন্ধুগণ, আমাদের আজকের আর্টিকেল থেকে আপনারা খুব সহজে জানতে পেরেছেন, পড়াশোনা মানে কি আমরা কেন পড়াশোনা করি, বুঝে বুঝে পড়া পড়াশোনা বিষয়ক ওয়েবসাইট, পড়াশোনা করার নেশা, পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার উপায় এবং সারাদিন পড়াশোনা করার উপায় ইত্যাদি সম্পর্কে। পড়াশোনা বিষয়ে আপনার আরো কিছু জানা থাকলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট করে আপনার প্রশ্ন উল্লেখ করবেন। আমরা আপনার প্রশ্ন অনুযায়ী আবার আর্টিকেল তৈরি করে আপনাদের সামনে প্রকাশ করব। সবার সুস্থতা ও মঙ্গল কামনা করে এখানেই আজকের আর্টিকেলটি শেষ করলাম। আসসালামু আলাইকুম।
আরো জানুন:
গ্রাফিক্স ডিজাইন কি | গ্রাফিক্স ডিজাইন কিভাবে শিখব