ডিজিটাল মার্কেটিং কি | ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

 ডিজিটাল মার্কেটিং কি | ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

আআসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠকগণ, আজকে আমি আপনাদের সাথে ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

ডিজিটাল মার্কেটিং বর্তমানে একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ব্যবস্থা। বর্তমান যুগে ডিজিটাল মার্কেটিং ব্যাপক হারে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল মার্কেটিং ছাড়া মার্কেটিং আপনি কল্পনাই করতে পারবেন না। আপনার মার্কেটের ব্যাপক প্রসার ঘটাতে হলে ডিজিটাল মার্কেটিং অবশ্যই দরকার আছে। আপনার ব্যবসা-বাণিজ্যের নানান ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে হলে অবশ্যই আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং লাগবে।

ডিজিটাল মার্কেটিং কি | ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ডিজিটাল মার্কেটিং কি

মনে করেন কোন একটা কোম্পানির অসংখ্য প্রোডাক্ট রয়েছে। সেই প্রোডাক্টগুলো বিজ্ঞাপন বা অন্য কোন মাধ্যমে প্রচারণা করাকেই ডিজিটাল মার্কেটিং বলে। ডিজিটাল মার্কেটিং করা হয় সাধারণত ফেসবুক অন্য কোন মাধ্যমে, এডের মাধ্যমে অথবা ইমেইল এর মাধ্যমে।

আবার রেডিও বা টেলিভিশনের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে পণ্যের প্রচারণা করাও কিন্তু একটা ডিজিটাল মার্কেটিং। এইভাবে আপনার মার্কেটিং এর প্রচারণা করতে হলে অবশ্যই যেই মাধ্যমে প্রচার করবেন সেই মাধ্যমগুলোকে অর্থ পেমেন্ট করতে হবে। এই অর্থের বিনিময়ে রেডিও বা টেলিভিশনে আপনার প্রোডাক্ট এর প্রচারণা করা হবে। যার ফলে আপনার প্রোডাক্ট সকলের কাছে পরিচিত লাভ করবে এবং আপনার বিক্রয়ের পরিমাণ বেড়ে যাবে।

এছাড়াও অনেকে মোবাইলের মাধ্যমে, মেসেজের মাধ্যমে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে বিভিন্ন ডকুমেন্টস এর মাধ্যমে, বিল বোর্ডের মাধ্যমে বা অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে তার প্রোডাক্টের প্রচারণা করে থাকে। এগুলোও কিন্তু এক ধরনের ডিজিটাল মার্কেটিং।

প্রোডাক্ট বলতে শুধু আপনার নিজস্ব প্রোডাক্ট থাকতে হবে এমন কোন কথা না। আপনি চাইলে অন্যের প্রোডাক্ট এর প্রচারণা করতে পারেন। এক্ষেত্রে কোম্পানির স্বত্বাধিকারী আপনাকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ পেমেন্ট করে দেবে।


ডিজিটাল মার্কেটিং কি | ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধাপসমূহ

নিচে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধাপসমূহ বিস্তারিত আকার উল্লেখ করা হলো:


১/ কন্টেন্ট মার্কেটিং:

বর্তমানে কন্টেন্ট মার্কেটিং করে ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপক ট্রেন্ডিং রয়েছে। আপনি চাইলে কোন লেখার মাধ্যমে অথবা সেই প্রোডাক্ট রিলেটেড ভিডিও বানিয়ে কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে পারেন। এভাবে প্রচুর কাস্টমার পাওয়া যায়।


২/ ইমেইল মার্কেটিং:

ইমেইল মার্কেটিং খুবই সহজ একটি মার্কেটিং। আপনার প্রোডাক্ট রিলেটেড অন্য যারা চায় তাদের ইমেইলগুলা কানেক্ট করতে পারেন। তো তাদের সেই ইমেইলে আপনি আপনার প্রোডাক্ট রিলেটেড বিভিন্ন তথ্য ও ছবি পাঠাতে পারেন। এর ফলে সেই তথ্য পরে এবং ছবি দেখে যদি তারা পছন্দ করে তাহলে আপনার প্রোডাক্ট কিনে নিবে। এভাবে আপনার প্রোডাক্ট এর ব্যাপক পরিমাণ প্রসার হচ্ছে এবং আপনার প্রোডাক্ট খুব সহজে বিক্রয় হচ্ছে।


৩/ এফিলিয়েট মার্কেটিং

সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সহ বাংলাদেশেও এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। আপনি চাইলে বাংলাদেশে প্রোডাক্ট এর এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। বাংলাদেশ এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য রয়েছে বিডিশপ, দারাজ ইত্যাদি মার্কেটপ্লেসগুলো। এছাড়াও বর্তমানে বিদেশী মার্কেটপ্লেস যেমন আলিবাবা, অ্যামাজন সহ আরো বিভিন্ন মার্কেটের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বাংলাদেশে ব্যাপক পরিমাণে অনেকেই করে আসছেন। বিদেশী মার্কেটপ্লেসে মার্কেটিং করলে ইনকামের পরিমাণটা সবচাইতে বেশি হয়।


৪/ ই কমার্স মার্কেটিং:

আপনি চাইলে ওয়েবসাইট খুলতে পারেন। ওয়েব সাইটে আপনার অনেকগুলা প্রোডাক্ট সাজানো থাকবে। প্রোডাক্টর দর দাম সম্পর্কিত বিস্তারিত সকল কিছু সেখানে উল্লেখ করা থাকবে। আপনার প্রোডাক্ট যার পছন্দ হবে সে সেই প্রোডাক্টের নাম লিখে গুগলে সার্চ করবে। আর অটো ভাবে আপনার ওয়েবসাইটটা সামনে শো হয়ে যাবে। যার ফলে সে আপনার প্রোডাক্ট কিনলে আপনার ইনকামের পরিমাণ বেড়ে যাবে। এভাবেও ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে।


৫/ সিপিএ মার্কেটিং

সিপিএ মার্কেটিং হলো প্রচলিত একটি মার্কেটিং। অনেকে সিপিএ মার্কেটিং করে হাজার হাজার, লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে। আপনি চাইলে আপনিও পারবেন। সিপিএ মার্কেটিং এর অর্থ হচ্ছে কস্ট পার অ্যাকশন( Cost Per Action)। অর্থাৎ কোন একটা অ্যাকশন পরিপূর্ণ হওয়ার কারণে আপনি কমিশন পাবেন। যেমন আপনি কোন সিপিএ মার্কেটিং এর ওয়েব সাইটে পাবলিশার হিসেবে একাউন্ট খুললেন। তো সেই মার্কেটপ্লেস থেকে প্রোডাক্ট এর লিংক শেয়ার করলেন। মানুষ প্রোডাক্টের লিংকে ক্লিক করে তাদের ইমেইল অথবা নাম্বার অথবা জিপ সাবমিট করল। তার মানে এটা একশন পরিপূর্ণ হল। এর ফলে আপনি একটা কমিশন পেয়ে যাবেন। আর প্রোডাক্ট কিনলে কোম্পানির প্রোডাক্ট সেল হল।


৬/ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং:

বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া হলো ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। যতই দিন যাচ্ছে ততই সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আপনার কাঙ্খিত প্রোডাক্টের পণ্য আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে পারেন। যেমন ফেসবুক থেকে অথবা ফেসবুক পেজ থেকে শেয়ার করবেন। এর ফলে আপনার প্রোডাক্ট অসংখ্য মানুষদের কাছে পৌঁছাবে এবং তাদের মধ্য থেকে কেউ কেউ আপনার প্রোডাক্ট কিনে নেবে।


৭/মেসেজ মার্কেটিং:

আপনি চাইলে মেসেজের মাধ্যমে মার্কেটিং করতে পারেন। এখানে আপনার টাচ ফোন না থাকলেও চলবে। বাটন ফোন দিয়েও আপনি মেসেজের মাধ্যমে মার্কেটিং করতে পারেন। শুধুমাত্র গ্রাহকদের নাম্বারে আপনার নাম্বার থেকে মেসেজ লিখে পাঠাবেন। মেসেজে অবশ্যই প্রোডাক্ট সম্পর্কে লিখে দেবেন এবং কোম্পানির ঠিকানা লিখে দিবেন। এতে করে আপনার প্রোডাক্ট বিভিন্ন মানুষের কাছে পৌঁছাবে এবং আপনার প্রোডাক্টের বিক্রয় বাড়বে।


ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা

বর্তমান যুগের ডিজিটাল মার্কেটের প্রয়োজনীয়তা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগের যুগে মানুষ সকল ধরনের প্রোডাক্ট বাজারে বা দোকানে গিয়ে কিনতো। এখন মানুষ অনলাইনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। অনলাইনে মানুষ প্রোডাক্টের দর দাম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে অনলাইনে অর্ডার করে ফেলে। এভাবে অনলাইন এর মধ্যে একটি অনলাইন বাজার তৈরি হয়ে গেছে। যতইদিন যাবে অনলাইনে মার্কেটে কেনাকাটার পরিমাণ বাড়তেই থাকবে। একটা সময় মানুষ সম্পূর্ণভাবে অনলাইনে অনলাইনের দিকে ঝুঁকে যাবে। এর ফলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রয়োজনীয়তা ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। অর্থাৎ আপনি যতই ডিজিটাল মার্কেটিং করবেন ততই আপনার প্রোডাক্ট অনলাইন এর কাস্টমারদের কাছে পৌঁছাবে এবং তারা আপনার প্রোডাক্ট কিনে নেবে।


ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ

যতই দিন যাচ্ছে ততই ডিজিটাল মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ ভালোই হচ্ছে। ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পূর্ণ অনলাইনে করা হয়। অনলাইনে মানুষ প্রোডাক্ট কিনে বেশি পরিমাণে। কারণ মানুষ বাজারে যাওয়ার সময় পাচ্ছে না, কেনাকাটা করার সময় পাচ্ছে না ব্যবসা-বাণিজ্য অথবা চাকরি করার কারণে। সারাদিন যখন অফিসের ডিউটি শেষে রাতে বাসায় ফিরে, তখন মানুষের মার্কেটে যাওয়ার মত মন মানসিকতা থাকে না। আবার সে সময় মার্কেটগুলো বন্ধ হয়ে যায়। তাই মানুষ সময় বাঁচানোর জন্য বর্তমানে অনলাইনে কেনাকাটা করে থাকেন। আর যতই দিন যাচ্ছে ততই মানুষ এই সহজপন্থাকে বেছে নিচ্ছে। ভবিষ্যতে মানুষ অনলাইনে আরো অধিক পরিমাণে ছুটবে। একটা সময় বাংলাদেশের অনলাইন মার্কেটপ্লেসও অন্যান্য দেশের মতো  মার্কেটপ্লেসের সিংহভাগ দখল করে নেবে।

বাজারে সরাসরি কোন প্রোডাক্ট কিনে এনে যদি বাসায় মানুষ দেখে সেটি নষ্ট, তাহলে আবার ফেরত দিতে বাজারে যাইতে সময় লাগে অথবা সমস্যা হয়। কিন্তু মানুষ অনলাইনে প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারে এবং পছন্দ হলে অর্ডার করে। কারণ অনলাইনে প্রোডাক্টের ছবিসহ বিস্তারিত উল্লেখ করা থাকে। তো এই অনলাইনের মার্কেটপ্লেস সম্পূর্ণটাই নির্ভর করছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর। কাজেই অনলাইনে আপনার প্রোডাক্টের বিক্রয় বাড়াতে হলে ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিকল্প নাই।


ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স

ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স রয়েছে। আপনি চাইলে নিজেও ডিজিটাল মার্কেটিং এর কোর্স শিখতে পারবেন ইউটিউব থেকে। ইউটিউবে বিভিন্ন ইউটিউবারদের ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স পাওয়া যায়। আপনারা চাইলে ইউটিউব থেকে শিখতে পারবেন খুব সহজে।

এছাড়া অনেকেই আছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর পেইড কোর্স বিক্রি করে থাকেন। এই কোর্সগুলো অত্যন্ত ভালো এবং এই কোর্সগুলোতে বেসিক থেকে এডভান্স পর্যন্ত সকল কিছু দেখানো থাকে।

বাংলাদেশের আনাচে কানাচে বিভিন্ন ধরনের আইটি অফিস আছে যেখানে ফ্রিল্যান্সিংয়ের কোর্স করানো হয়ে থাকে।  বিশেষ করে ঢাকাতে এই আইটি সেক্টর গুলো বেশি পরিমাণে দেখা যায়। আপনি চাইলে এসব আইটি ফার্মে স্বল্প কিছু পেমেন্টের বিনিময়ে ডিজিটাল ফ্রিল্যান্সিং এর কোর্স করতে পারবেন। সেখানে আপনাকে নিয়মিত অথবা অনিয়মিত এক ঘন্টা অথবা ২ ঘন্টা সময় দিয়ে কোর্স করানো হবে। আবার সেগুলো আপনাকে বাসায় এসে প্র্যাক্টিস করতে হবে। যেখানে বুঝতে আপনার সমস্যা হবে, আবার পরবর্তী ক্লাসের সেগুলো শিক্ষকদের কাছে জিজ্ঞেস করে বুঝে নিতে পারবেন। 

কিছু কিছু আইটি সেক্টর আছে যেগুলোতে আপনাকে ইনকাম করা পর্যন্ত সাপোর্ট দিয়ে থাকে। তবে তারা একটু পেমেন্ট বেশি পরিমাণে নেয়। আপনার যদি অর্থগত কোন সমস্যা না থাকে তাহলে এসব সেক্টর গুলোতে ভর্তি হতে পারেন। কারণ যেহেতু তারা আপনাকে ইনকাম করা পর্যন্ত সাপোর্ট দেবে তাহলে এটা আপনার জন্য অধিকতর ভালো হবে। যখন আপনি ইনকাম পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবেন তখন আপনি নিজেই বুঝে যাবেন আপনি সঠিকভাবে কোর্স করতে সফল হয়েছেন। এরপর থেকে আপনি নিজেই নিজের মতো করে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন।


শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বন্ধুগণ, আমরা আজকে আপনাদের সাথে ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করলাম। ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে আপনাদের আরো কোন বিষয় জানার প্রয়োজন হলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন। আজকের আর্টিকেলটি এখানেই শেষ করার মাধ্যমে সবার কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি। সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।
















একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন